পরপর দু’বার করণি সেনার হামলা। ক্ষতির পরিমাণ ঠিক কতটা?
টাকার অঙ্কে ক্ষতি যেটা হয়েছে, সেটা তো রয়েছেই। তাছাড়াও ওরা চেয়েছিল আমাদের টিমের মর্যালটাকে ভেঙে দিতে। সেটা অত সহজ নয়। বিশেষ করে সঞ্জয় স্যারের মনের জোর ভাঙা কঠিন। আর এখানে সকলেই পেশাদার। বরং এবার দ্বিগুণ উদ্যমে কাজ শুরু করেছি আমরা।
শ্যুটিং ফের চালু হয়ে গিয়েছে?
কোলহাপুরে সঞ্জয় স্যারের সঙ্গে গিয়ে রেকি করে এলাম দিন দুয়েক আগেই। শ্যুটও শুরু হয়ে গিয়েছে। মোট ২৪০ দিনের শিডিউল ছিল। যার মধ্যে ১৬০ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। এই সেট’এই আরও
দু’-তিন মাস কাজ চলবে।
হামলার পরে কি লোকেশন বদল করতে হয়েছে?
না, আগের লোকেশনগুলোই রয়েছে। ইনফ্যাক্ট, সেট এবং অন্য সবকিছুই পুরোপুরি আগের মতোই থাকছে। ‘পদ্মাবতী’র বেশিরভাগটাই রাজস্থান আর কোলহাপুরে সেট তৈরি করে শ্যুট করা হচ্ছে। ছবিতে রিয়েল লোকেশন খুব কমই ব্যবহার হচ্ছে। পুরো ছবিটার জন্য মোট ২১টা সেট তৈরি হওয়ার কথা। যার মধ্যে ১১টা বানিয়ে ফেলেছি আমরা।
সেট তৈরির সময় রেফারেন্স হিসেবে কী পেয়েছেন?
‘পদ্মাবতী’র ক্ষেত্রে বিষয়টা সত্যিই কঠিন ছিল। এত পুরনো একটা সময়কে ধরা হচ্ছে, যে সময়কার পিকটোরিয়াল কিছু এভিডেন্স পাওয়াটা শক্ত। সঞ্জয় স্যার অনেক আগে থেকেই কাজ শুরু করে দিয়েছিলেন। আমাদের রিসার্চ টিমও প্রচুর খেটেছে। গাইড আর ইতিহাসবিদদের সাহায্যও নিয়েছি আমরা। তবে কোনও কোনও জায়গায় সরকারি গাইডের কথাবার্তা রীতিমতো অবাক করেছিল আমাদের!
কী রকম?
চিতোরগড়ের আদলে সেট তৈরি করছি। আসল দুর্গে জলমহল বলে গাইডরা যেটা দেখান, সেটা অনেক পরে তৈরি। আমাদের রিসার্চ অনুযায়ী জায়গাটা সম্ভবত কীর্তিস্তম্ভের আশপাশে। চিতোরের রক-কাট আর্কিটেকচার অনুযায়ী আমরাও জলমহল তৈরি করেছি, একটু অন্যভাবে। এছাড়া জহরব্রত পালন করা হতো বলে যে জায়গাটা দেখানো হয়, ওটারও ঐতিহাসিক সত্যতা সম্পর্কে সন্দেহ রয়েছে। ছবিটা যে বিষয় নিয়ে, অনেকের কাছেই সেটা ‘মিথ’। তবে আমরা চেষ্টা করেছি যতটা সম্ভব রিয়্যালিস্টিক ভাবে কাজটা করা যায়।
রাজস্থানী মিনিয়েচার পেন্টিং বা পিছওয়াই আর্ট ফর্মের ব্যবহার রয়েছে?
হ্যাঁ। যদিও সেই সময়ে পিছওয়াই পেন্টিং এসেছিল কিনা নিশ্চিতভাবে জানা যায় না। তবুও আমরা দেখাচ্ছি। আর্ট কলেজের বহু শিল্পী আমাদের টিমে কাজ করছেন। আর রঙের ব্যবহারটা পুরোপুরি কল্পনানির্ভর। প্রায় ৩০-৩৫টা ড্রইংয়ের পর চিতোরের ডিজাইনটা ফাইনাল করা হয়েছে।
বিশাল ভরদ্বাজের ঘরের লোক আপনি। আর সঞ্জয় লীলা ভংসালীর সঙ্গে আপনার এটা প্রথম কাজ। দু’জনের মধ্যে তফাতটা কী রকম?
বিশালজি ভীষণ রিয়্যালিস্টিক। ওঁর ছবিতে ড্রামাও থাকে, কিন্তু চেষ্টা করেন যতটা বাস্তবের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া যায় ছবিকে। অন্যদিকে, সঞ্জয় স্যার বিষয়টাকে সাররিয়েল জায়গায় নিয়ে যান। সেট’এ স্বপ্নের মতো লাইট তৈরি করতে পারেন। এটাই ওঁকে অন্য পরিচালকদের চেয়ে আলাদা করে দেয়।
‘রেঙ্গুন’এর অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
‘রেঙ্গুন’এ চল্লিশের দশককে তুলে ধরা হয়েছিল। বিশালজির এই ছবিটা করার প্ল্যান অনেকদিনের। প্রথমে ছবিটার নাম ছিল ‘জুলিয়া’। সমীর চন্দ ছিলেন তখন। আমার আর অমিতের মেন্টর। উনি চলে যাওয়ার পরেও বিশালজি আমাদের উপর আস্থা রেখেছিলেন।
এরপর কী কাজ করছেন?
‘ধর্ম প্রোডাকশনস’, ‘নাদিয়াদওয়ালা গ্র্যান্ডসনস’এর সঙ্গে কথা চলছে। তবে ‘পদ্মাবতী’র জন্য এখনই অন্য কিছু হাতে নিচ্ছি না। শুধু নিখিল আ়ডবাণীর ‘লখনউ সেন্ট্রাল’এর কাজটা করলাম। আমাদের সুবিধে হবে বলে ছবিটার সেট ফেলা হয়েছিল ‘পদ্মাবতী’র সেট’এর পাশেই।
‘দঙ্গল’এর প্রস্তাবও নাকি এসেছিল আপনাদের কাছে?
হ্যাঁ। ‘দঙ্গল’ প্রায় দু’বছরের চুক্তি করতে চেয়েছিল। তখন ‘রেঙ্গুন’এর কাজ চলছিল, তাই প্রায় বুকে পাথর চাপা দিয়ে ওঁদের না বলতে হয়েছিল (হাসি)। ‘বেগমজান’এর প্রস্তাবও এসেছিল একই সময়। সেটাও ফিরিয়ে দিয়েছিলাম।