‘‘বাবা বলতো, একটা মিথ্যে কথাকে যদি এক-দেড়শো বার বলা হয়, তবে সেটা সত্যি হয়ে যায়। এটা হিউম্যান সাইকোলজি’’, বলে চলেন বাংলা টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেতা রাজ ভট্টাচার্য, ‘‘আমাদের চারদিকে যে প্রতিনিয়ত এত ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে, আজ থেকে চার-পাঁচ দশক আগে তো এতটাও হতো না। কামদুনি থেকে আসিফা— অনেক ঘটনা ঘটে চলেছে। সংবাদমাধ্যমে সেই ঘটনার খবর আসছে রোজ, পাড়ায়-বাসে-ট্রামে-চায়ের দোকানে সর্বত্র আলোচনা চলছে। আমার সেখান থেকে মনে হল তবে কি এটা আমাদেরই নিজেদের তৈরি করা পারভারসন? এত বেশি এই ধরনের ঘটনা মানুষের সামনে আসছে বলেই মানুষ দিন দিন আরও বিকৃত হয়ে উঠছে?’’
ছবি সৌজন্য: রাজ ভট্টাচার্য
সম্প্রতি এই প্রশ্নের সন্ধান করেছেন রাজ ভট্টাচার্য তাঁর ছোট ছবি ‘কশ-ম-কশ’-এ। প্রযোজক হিসেবে এটাই তাঁর প্রথম পদক্ষেপ। ২২ মিনিটের এই ছবিটি পরিচালনা করেছেন মন্দার বন্দ্যোপাধ্যায়। সিনেম্যাটোগ্রাফি উত্তীয় মুখোপাধ্যায়ের। প্রধান চরিত্রে রয়েছেন রাজ নিজে এবং সুকন্যা গোস্বামী। কিছুদিন আগে মুম্বইয়ের একটি শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ছবিটি প্রদর্শিত হয়েছে এবং সেখানে প্রশংসাও কুড়িয়েছে। অভিনেতা হিসেবে ক্রিটিকস চয়েস অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছেন রাজ। ছবির টিজার কিছুদিন আগে সোশ্যাল মিডিয়া ও ইউটিউবে পোস্ট করা হয়েছে। দেখে নিতে পারেন সেই টিজার নীচের লিঙ্কে ক্লিক করে—
বাংলা টেলিভিশন ও ছবি মিলিয়ে প্রায় ৮-৯ বছরের অভিনয়ের কেরিয়ার রাজ ভট্টাচার্যের। বিগত তিন-চার বছর ধরেই তিনি ভাবছিলেন প্রযোজনা সংস্থা শুরু করার কথা। ‘‘ভাবনাচিন্তা ছিল যে শর্ট ফিল্ম দিয়ে শুরু করব। মন্দারের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল আগেই। সিক্সটি ফ্রেমস মিডিয়া, আমার প্রযোজনা সংস্থাটি তৈরি হওয়ার পরে ওকে একদিন ডেকে পাঠালাম। ওর অনেক শর্ট ফিল্মস দেখেছি আগে। তার পর আলোচনা হতে হতেই ‘কশমকশ’ উঠে এল’’, জানালেন রাজ।
ছবি সৌজন্য: রাজ ভট্টাচার্য
এই ছোট ছবির অনেকটা অংশের শ্যুটিং করা হয়েছে লোকাল ট্রেনে, নিত্যযাত্রীদের মধ্যেই। সেখানে বেশ কিছু সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে, যাত্রীদের নানা ধরনের টিকা-টিপ্পনিও শুনতে হয়েছে কিন্তু রাজ জানালেন যে সেটাই ছিল প্রযোজক হিসেবে তাঁর চ্যালেঞ্জ। কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শ্যুটিং সম্পূর্ণ করেছে ‘কশ-ম-কশ’ ইউনিট। ‘‘পুরো শ্যুটিংটাই চন্দননগরে করেছি। ট্রেনের দৃশ্যগুলো চন্দননগরের রাতের দিকের ট্রেনে শ্যুট করা। আমরা যখন লাস্ট ট্রেনে পৌঁছই, তখন রাত দেড়টা বাজে।
ছবি সৌজন্য: রাজ ভট্টাচার্য
সারারাত শ্যুট করে একটা জায়গায় বিশ্রাম নিয়েছি। তার পরে সকাল সাতটা থেকে আবারও শ্যুট করে বাড়ি ফিরেছি। আমি জানি না কতটা অ্যামেচারিস্ট হয়েছে কাজটা, আমরা আমাদের পক্ষ থেকে চেষ্টা করেছি। কিছুটা প্রশংসাও পেয়েছি। কিন্তু শুধু ফেস্টিভ্যালে প্রশংসা পাওয়াটা লক্ষ্য নয়। আমরা চাই এমন কোনও ওয়েব পোর্টাল আমাদের কাছে এগিয়ে আসুক, যাতে অনেক মানুষ, অনেক ভিউয়ার্স এটা দেখতে পারে।’’