এই সময়ের বাংলা থিয়েটার মঞ্চে তিনি জনপ্রিয় দু’টি কারণে। প্রথমত, থিয়েটারের নতুন প্রজন্মের অভিনেতাদের মধ্যে যাঁরা অগ্রগামী, তাঁদের মধ্যে তিনি অন্যতম। দ্বিতীয়ত, শুধুমাত্র অভিনেতা নন, পাশাপাশি তিনি নাট্যকারও। ‘নান্দীকার’-পরিবারের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, সোহিনী সেনগুপ্তের স্বামী সপ্তর্ষি মৌলিক এবার ডেবিউ করতে চলেছেন পর্দায়।
আগামী রবিবার, ২০ জানুয়ারি, ‘জি বাংলা সিনেমা’-তে, সন্ধ্যা ৭টায় সম্প্রচারিত হবে পর্দায় তাঁর প্রথম কাজ— জি বাংলা অরিজিনালস, ‘চোরে চোরে মাসতুতো ভাই’। এই ছোটপর্দার ছবিতে প্রধান ভূমিকায় রয়েছেন সপ্তর্ষি, সৌরভ দাস, নেহা অমনদীপ ও ঐন্দ্রিলা শর্মা। তবে ২০১২ সালের আগে অভিনয়ের সঙ্গে তেমন কোনও সম্পর্কই ছিল না তাঁর।
ছবি: সপ্তর্ষির ফেসবুক পেজ থেকে
‘‘আমি মূলত র্যাপ করতাম, কবিতা লিখতাম। ‘এমিনেম’ আমার ছোটবেলা থেকেই খুব প্রিয়। ২০১২ সালে প্রথম ‘নান্দীকার’-এর একটা ওয়র্কশপের বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে’’, এবেলা ওয়েবসাইটকে বলে চললেন সপ্তর্ষি, ‘‘ওখানে গিয়ে প্রথম যাঁর সঙ্গে আমার আই কনট্যাক্ট হয়, প্রায় দু’মিনিটের, তিনি হলেন স্যার (রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত)। ওই মুহূর্তটা আমার কাছে খুব স্পেশাল। তখন থেকেই মনে হয়েছিল যে দিস ইজ মাই প্লেস। আমি যা করতে চাই বা চিৎকার করে বলতে চাই, সেটা এখানে করা যায়।’’
ছবি: সপ্তর্ষির ফেসবুক পেজ থেকে
সপ্তর্ষির অভিনয় জীবনের সেটাই ছিল সূত্রপাত এবং বৈবাহিক জীবনেরও সূত্রপাত বলা যায়। ‘নান্দীকার’-এর প্রশিক্ষণ চলাকালীনই আলাপ সোহিনী সেনগুপ্তের সঙ্গে। তার পরে ‘মাধবী’ নাটকে তাঁর অভিনয় দেখে মুগ্ধতার শুরু। ‘‘সোহিনীর সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছিল যে ওই মানুষটা আমারই মতো। সোহিনী বলেছিল যে আমাকে যদি ভাল লাগে তবে বাবাকে গিয়ে বলো। তখন আমি যথেষ্ট রোগা ছিলাম, মনে মনে বেশ ভয় নিয়েই গিয়েছিলাম’’, হাসতে হাসতে জানালেন সপ্তর্ষি, ‘‘স্যারকে যখন বললাম যে আপনার মেয়েকে আমি বিয়ে করতে চাই, স্যার কিছু বলার আগে পাশের ঘরে চলে গেলেন। তার পরে শুনলাম খুব জোরে জোরে হাসছেন। বুঝলাম ভয় নেই।’’
‘চোরে চোরে মাসতুতো ভাই’-এর একটি দৃশ্যে সপ্তর্ষি, সৌরভ, নেহা ও ঐন্দ্রিলা। ছবি সৌজন্য: জি বাংলা সিনেমা
২০১৩ সালে সোহিনী সেনগুপ্তের সঙ্গে বিয়ে এবং তার পরে প্রায় ৬ বছরের সংসার, যে সংসারের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে থিয়েটার এবং ‘নান্দীকার’। তবে অভিনেতা হিসেবে সব মাধ্যমেই কাজ করতে চান সপ্তর্ষি। কয়েক মাস আগে ‘পাঞ্চজন্য’ নাটকটি দেখতে আসেন রাজ চক্রবর্তী ও শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়। সপ্তর্ষির অভিনয়ে মুগ্ধ হয়ে পরিচালক নিজেই গ্রিনরুমে এসে জানান যে তিনি কাজ করতে চান অভিনেতার সঙ্গে।
‘‘এটা আমার টেলিভিশনে প্রথম কাজ এবং অসম্ভব ভাল একটা অভিজ্ঞতা। রাজদা এবং জি বাংলা-কে অনেক ধন্যবাদ তার জন্য। মূল গল্পটা রাজদার কিন্তু চিত্রনাট্য ও পরিচালনা অরিজিৎ চক্রবর্তীর। খুব মজার একটি চিত্রনাট্য। এবং খুব ভাল লেগেছে সৌরভ, ঐন্দ্রিলা, নেহার সঙ্গে কাজ করে। পদ্মনাভদা, গৌতমদার মতো সিনিয়র অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করতে পারাটা সত্যিই দারুণ’’, জানালেন সপ্তর্ষি।