আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ— পোপ ফ্রান্সিস সম্প্রতি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, বিশ্বে শয়তান উপাসনা ও কালো জাদুর চর্চা সাংঘাতিক রকমে বেড়ে চলেছে। এর জন্য দায়ী ইন্টারনেট। এই বিপদকে সামলানোর জন্য প্রয়োজন অনেক বেশি সংখ্যায় এগজরসিস্ট। পোপের এই বক্তব্য সমর্থন করেছেন খ্যাতনামা মার্কিন মনোবিদ রিচার্ড গ্যালাঘার। বিশ্ব ব্যেপে বিজ্ঞানবাদীরা এই নিয়ে ঠাট্টা-তামাশা করছেন।
একবিংশ শতকে এমন আজগুবি কথা কী করে মেনে নেওয়া যায়, তা তাঁরা ভেবে পাচ্ছেন না, এমনটাই তাঁদের বক্তব্য। কিন্তু তাঁরা একথা কিছুতেই বুঝতে চাইছেন না যে, রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টধর্মের গোড়াতেই রয়েছে ‘শয়তান’-এর উপস্থিতি। ঈশ্বর থাকলে শয়তানও থাকেন। না হলে লীলা পোষ্টাই হয় না— একথা গত শ’তিনেক বছর ধরে বোঝাতে চাইলেও বিজ্ঞানবাদীরা বোঝেন না। তাঁরা ক্যাঁও-ম্যাও চালিয়েই যান।
সে যা-ই হোক, ইন্টারনেট যে শয়তানের স্বর্গরাজ্য, তা এক্কেবারেই নির্যস সত্যি। অন্তর্জালের আনাচে কানাচে খাপ পেতে বসে রয়েছেন শয়তান স্বয়ং। না, এর জন্য ডার্ক বা ডিপ ওয়েব পর্যন্ত যেতে হবে না। সারফেস ওয়েবেই শয়তানি ইলাকা জমজমাট। পোপের বক্তব্য ছিল— যে হারে ইন্টারনেটে শয়তান-উপাসনা বেড়ে চলেছে, তাতে এই মর সংসারে দুর্যোগ আসন্ন। একথা অস্বীকার কিছুতেই সম্ভব নয় যে, ইন্টারনেট এই মুহূর্তে শয়তানবাদীদের অবাধ বিচরণক্ষেত্র। যেখানে সেখানে শয়তান উপাসনা, ডাকিনীবিদ্যা চর্চা ও কালো জাদু প্র্যাকটিসের ওয়েবসাইট। পশ্চিমের বিখ্যাত ‘চার্চ অফ স্যাটান’ থেকে শুরু করে সেদেশের উইচক্র্যাফট শিক্ষা— সব কিছুরই ওয়েবসাইট রয়েছে। যার যেখানে ইচ্ছে, নাড়া বাঁধুন। কেউ মানা করবে না। আর মানা করলেই বা শুনছে কে? নেট-বিশ্বে কে কার গার্ডিয়ান!
শয়তানি বাইবেল নিয়ে কসরত। ছবি: শাটারস্টক
• চার্চ অফ স্যাটান জানায়, শয়তান আমাদের জাগতিক চাহিদাসমূহ দ্রুত পূরণের আশ্বাস দেন। ফলে দূরবর্তী, ধোঁয়াটে ঈশ্বরের চাইতে তিনি ঢের বেশি কাছের। ফলে শয়তানের উপাসনা ঈশ্বরের চাইতে অনেক বেশি জরুরি। চার্চ অফ স্যাটান-এর মেম্বারশিপ পেতে হলে নগদ খসাতে হবে ভালই। সেটাকা কোথায় যাবে, কী হবে তা দিয়ে, তা নিয়ে কোনও স্পষ্ট ইঙ্গিত নেই। টাকা যেখানেই যাক, এহেন চার্চ যে মেনস্ট্রিম খ্রিস্টধর্মকে ওপেন চ্যালেঞ্জ ছোড়ে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
• ওয়ার্ল্ড অফ উইক্কা আর এক ওয়েব ডোমেইন, যেখানে প্রাচীন উইক্কা দর্শনের চর্চা চলে নিরন্তর। ‘উইক্কা’ শব্দটি থেকেই এসেছে ‘উইচ’ শব্দটি। প্রাক-খ্রিস্টান এই চর্চার অনেক কিছুকেই ‘কালো জাদু’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল রোমান চার্চ। প্রাচীন যুগের শেষ থেকে মধ্যযুগ জুড়ে চলে ইনকুইজিশন ও উইচ-নিধনের দাপট। কিন্তু ইন্টারনেটে কে কাকে পোঁছে! রীতিমতো মন্ত্র-তন্ত্র আউড়ে বশীকরণ, মারণ-উচাটনের রমরমা এই সব সাইটে।
শুধু তত্ত্বচর্চা নয়, প্র্যাক্টিক্যালেরও হদিশ রয়েছে এই সব সাইটে। ছবি: শাটারস্টক
• শয়তান থেকে জিন, জিন থেকে প্রেতাত্মা— সকলেরই আহ্বান সম্ভব, একথা জানাতে ঝাঁকে ঝাঁকে ওয়েবসাইট। তার উপরে রয়েছে এই সব কালো জাদু সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর বাণিজ্য। খেলা দারুণ জমজমাট, সন্দেহ নেই।
তবে, ভারতের কাছে কে-ই বা টেক্কা পায়! না ওয়েব সাইট-ফাইটে ভারতীয়রা তেমন আগ্রহী নন। ইউটিউব ভেসে যাচ্ছে কালো জাদু-র ভিডিও-য়। এখানে একটা নমুনা রাখলাম। যদি অনুমতি দেন, আগামী এপিসোডে আরও খুলে দেখানো যাবে।
ভিডিও দেখুন