ইউরোপের এক প্রাচীন শিল্প ‘কেশশিল্প’। না, স্টাইল করে চুল কাটার শিল্প নয়। চুল দিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরির শিল্প। কখনও গয়না, কখনও ছবির ফ্রেম, কখনও বা ঘর সাজানোর বিভিন্ন উপকরণ তৈরি হতো চুল দিয়ে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সপ্তদশ শতক থেকেই এই শিল্প চর্চিত হতে থাকে। পরে ভিক্টোরীয় ইউরোপে, অর্থাৎ ১৯ শতকে চুল-শিল্প বিপুল আকার ধারণ করে।
চুল দিয়ে এমব্রয়ডারি, ছবি: লেইলা’জ হেয়ার মিউজিয়াম-এর ফেসবুক পেজ
মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ইতিহাস বিষয়ক জার্নালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে দেখানো হয়েছে, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স পেরিয়ে এই শিল্প ১৯ শতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসে পৌঁছয়। সে দেশেও তৈরি হতে শুরু করে চুলের ব্রেসলেট, নেকলেস, আংটি, পেন্টিং, মেডালিয়ন ইত্যাদি।
চুল দিয়ে সজ্জিত ক্রস, ছবি: লেইলা’জ হেয়ার মিউজিয়াম-এর ফেসবুক পেজ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিসুরি স্টেটের ইন্ডিপেন্ডেন্স শহরের বাসিন্দা লেইলা কোহুন এক সময়ে কসমেটলজি পড়তেন। অবসরগ্রহণের পরে তিনি গড়ে তুললেন এক সংগ্রহশালা। এই মিউজিয়ামেই ঠাঁই হলো ১৯ শতক থেকে সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত চুল শিল্পের নানা নিদর্শনের। ১৯৫৬ সাল থেকে লেইলা সংগ্রহ করছেন হেয়ার আর্র্ট-এর বিবিধ নিদর্শন। চুলকে লেইলা মানবদেহের এক অত্যাশ্চর্য অঙ্গ বলেই মনে করেন। আজ তাঁর তৈরি মিউজিয়াম দেশের অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থান।
ফ্রেমবন্দি চুল-শিল্প, ছবি: লেইলা’জ হেয়ার মিউজিয়াম-এর ফেসবুক পেজ
লেইলা’জ হেয়ার মিউজিয়াম-এ ৬০০-রও বেশি রিদ, ২০০০টি গয়না রয়েছে। মিউজিয়ামের সব থেকে পুরনো সংগ্রহটি একটি ব্রোচ। এটি ১৬৮০ সালের। ফ্রেমে বাঁধানো অগুনতি শিল্পকর্ম রয়েছে, যাদের বয়স কম করে শতবর্ষ। এর বাইরে এই সংগ্রহশালায় রয়েছে বেশ কিছু বিখ্যাত মানুষের চুল। এই তালিকায় রয়েছেন, জর্জ ওয়াশিংটন, আব্রাহাম লিঙ্কন, এমনকি, মহারানি ভিক্টোরিয়াও।