রাশিচক্রের চতুর্থ রাশি কর্কট একটি চর ও জলরাশি। কেন কর্কট একটি রাশিচিহ্ন? মনে রাখা দরকার, কর্কট বা কাঁকড়া একটি জলজ প্রাণী। সাধারণত এরা জলের ধারের বালিতে গর্ত করে বাস করে। উপর থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে, সেই গর্তটির নীচে কাঁকড়া রয়েছে। সমুদ্র বা নদীতট ফাঁকা হয়ে গেলে কাঁকড়ারা বেরিয়ে আসে। এদের গতিপ্রকৃতি চঞ্চল, যাত্রাপথ অনেকটাই উদ্দেশ্যহীন। তবে, সামান্যতম বিপদের আভাস পেলে এরা বালির মধ্যে অদৃশ্য হয়ে যায়।
কাঁকড়ার এই স্বভাবকেই বৈদিক জ্যোতিষের প্রথম যুগের ভাবুকরা দেখতে চেয়েছিলেন কর্কট রাশির মধ্যে। এই রাশির জাতকের মধ্যে তাঁরা আবিষ্কার করেছিলেন কাঁকড়ার চরিত্রের বহু দিক। দেখে নেওয়া যেতে পারে সেগুলিকে।
• রাশিচক্রের কর্কটের ঘরটি চন্দ্রের ঘর। চন্দ্র মন ও কল্পনার কারক গ্রহ। সে কারণে কর্কট-জাতক বিপুল পরিমাণে কল্পনাপ্রবণ।
• তাঁরা এতটাই কল্পনাপ্রবণ যে, প্রায়শই সাধারণের কাছে তাঁরা দুর্বোধ্য হয়ে পড়েন। কাঁকড়ার গতি প্রকৃতি যেমন আপাত-দুর্বোধ্য, তেমনটাই হয় কর্কটের জাতকের ক্ষেত্রেও।
• কাঁকড়ার চরিত্রের স্পর্শকাতর দিকটি কর্কট-জাতকের চরিত্রেও লক্ষ্যণীয়। সেই সঙ্গে এঁরা সবিশেষ ভাবপ্রবণও হয়ে থাকেন।
• কল্পনাপ্রবণতার সুবাদে এঁরা যে কোনও পরিকল্পনা রূপায়ণে দক্ষতার পরিচয় দিয়ে থাকেন। তবে চররাশি হওয়ার কারণে পরিকল্পনাটি নির্দিষ্ট হয় না।
আরও পড়ুন
জ্যোতিষকথা: কেমন হন বৃষ রাশির জাতক, কী জানায় বৈদিক জ্যেতিষ
• বারংবার পরিবর্তনশীলতার মাধ্যমে কর্কট-জাতক তাঁদের পারিবারিক ও কর্মজীবনকে সাজাতে চান। কিন্তু চন্দ্রের প্রভাবে এই পরিকল্পনাগুলির ব্যবহারিক বা বাণিজ্যিক দিকগুলি যতটা প্রকট হবে, তার থেকে অনেক বেশি আবেগ নিহিত থাকায় এগুলি অন্যের কাছে দুর্বোধ্য ঠেকবে। তাই, অনেক পরিকল্পনা কার্যকর না-ও হতে পারে।
• তবে, কর্কট-জাতক তাঁদের ব্যর্থতায় সহজে বিচলিত হন না। তাঁরা কাঁকড়ার স্বভাবে অন্য কিছু সর্বদাই খুজে যাবেন। তাঁদের এই প্রয়াস বিরামহীন।
(লেখক বৈদিক জ্যোতিষ, নিউমেরোলজি, বাস্তু ও ফেং শ্যুই বিশেষজ্ঞ)