প্রিয়জনেদের ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন ওঁরা। কিন্তু ভারত সরকারের অবস্থানেই কোনও চমৎকারের ক্ষীণ সম্ভাবনা বেঁচে ছিল ওঁদের মনে। মঙ্গলবার বিদেশ মন্ত্রী সুষমা স্বরাজের ঘোষণার পরে তাই ক্ষুব্ধ ইরাকে নিহত ভারতীয়দের পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ, হতাশায় কেউ কেউ প্রশ্ন করছেন, নিহতদের পরিবারকে আগে খবর না দিয়ে কেন সংসদ এবং সংবাদমাধ্যমে ভারতীয় শ্রমিকদের মৃত্যুর খবর জানালেন সুষমা?
২০১৪ সালের মাঝামাঝি ইরাকে ৩৯জন ভারতীয় শ্রমিককে অপহরণ করে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস। এতদিন স্বীকার না করলেও মঙ্গলবার সংসদে সুষনা স্বরাজ জানান, অপহৃত সব ভারতীয়কেই হত্যা করে আইএস জঙ্গিরা। মৃতদের দেহাংশ উদ্ধার করে দেশে ফেরত আনা হচ্ছে। নিহত এই ৩৯জনের মধ্যে ২৭জনই পঞ্জাবের। স্বভাবতই বিদেশমন্ত্রীর ঘোষণার পরে পঞ্জাবেই ক্ষোভ সবথেকে বেশি।
নিহত ভারতীয় শ্রমিকদের অধিকাংশই নিজেদের পরিবারের দিকে তাকিয়ে মোটা উপার্জনের আশাতেই ইরাকে পাড়ি জমিয়েছিলেন। অভাবের তাড়নাতেই প্রাণের ঝুঁকি উপেক্ষা করেছিলেন তাঁরা।
মৃতদের পরিবারের অনেকেরই অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তাঁরা যখনই দরবার করেছেন, একবারের জন্যও সরকারের তরফে মৃত্যুর কথা বলা হয়নি। আচমকা মঙ্গলবার শ্রমিকদের মৃত্যু হয়েছে বলে সরকার ঘোষণা করায় তাই হতাশ এই পরিবারগুলি। একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকের প্রতিবেদনে এমনই দাবি করা হয়েছে।
এমনই নিহত এক শ্রমিক হরসিমরনজিৎ সিংহর মা হরভজন কউরের দাবি, গত বছর মে মাসে যখন তিনি সুষমার স্বরাজের সঙ্গে দেখা করেন, তখনও কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রী তাঁর ছেলের মৃত্যুর কথা স্বীকার করতে রাজি হননি। এতদিন তাই আশায় আশায় থাকা বৃদ্ধা এখন বলছেন, ‘‘নিয়তি আমার ছেলেকে কেড়ে নিল, এখন আমার কাছে কানাকড়িও নেই।’’
আরও এক শ্রমিক মনজিন্দর সিংহর বোন গুরপিন্দর কউরও ক্ষোভের সঙ্গে প্রশ্ন করেন, ‘‘আমরা এতবার ওঁনার সঙ্গে দেখা করেছি। কিন্তু আমাদেরকে কিছু জানানোর প্রয়োজন বোধ না করে উনি সংবাদমাধ্যমকে আগে খবরটা জানালেন।’’