এক দেশ, এক কর, এক বাজার। জিএসটি সূচনার অনুষ্ঠানের শুরুতে এই ভাষাতেই পণ্য পরিষেবা কর চালুর অনুষ্ঠানের সূচনা করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।
রাত ঠিক ১২টায় চালু হয় জিএসটি। তার আগে পর পর বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি। রাত ঠিক ১১টা ২০ মিনিটে নিজের ভাষণ শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর শুরুতেই তিনি বলেন, এই মধ্যরাতে দেশের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করতে চলেছি আমরা।
প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেন, ‘‘এই সাফল্য কোনও একটি রাজনৈতিক দল বা কোনও সরকারের কৃতিত্ব নয়। এটা সামগ্রিক চেষ্টার ফসল। একটা দীর্ঘ আলোচনার ফসল জিএসটি। প্রতিটি রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকার সহযোগিতা করেছে। শুধু বর্তমান সরকার নয়, অতীতের সরকারও চেষ্টা চালিয়েছে। সেই সবেরই পরিণামে এ দিন জিএসটি-র সূচনা সম্ভব হল।’’
ভারত কী করতে পারে তা এই জিএসটি-র মাধ্যমে বিশ্বকে দেখানো যাবে বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। নিজের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী চাণক্যের শ্লোক থেকে গীতার সঙ্গে তুলনা করেন জিএসটির। তিনি বলেন, ‘‘জিএসটি কাউন্সিলের ১৮টি বৈঠকের পরে আজ তার সূচনা হচ্ছে। গীতারও ১৮টি অধ্যায়।’’ জিএসটির নতুন নামও দেন মোদী। তাঁর ভাষায় জিএসটি মানে— ‘গুড অ্যান্ড সিম্পল ট্যাক্স।’
অালোকমালায় সজ্জিত পার্লামেন্ট ভবন। ছবি: পিটিআই
জিএসটি ভারতকে আধুনিক করবে, দুর্নীতিমুক্ত করবে বলে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর ফলে দেশের সৎ মানুষের সুদিন আসবে। গরিবের উপকার হবে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সরকার এই চেষ্টা করেও পারেনি। এবার তা সম্ভব হবে। দুর্নীতি বন্ধ হয়ে সুদিন আসবে বলতে গিয়ে মোদী বলেন, ‘‘কাচা বিল, পাকা বিলের দিন শেষ হল দেশে।’’
জিএসটি নিয়ে কিছু সমস্যা হবে বলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘নতুন চশমা পরলে প্রথম কিছু দিন সমস্যা হয় কিন্তু পরে অভ্যাস হয়ে যায়।’’ জিএসটি কার্যকর হলে গোটা বিশ্বের কাছে ভারত বিনিয়োগ করার বড় ক্ষেত্রে হয়ে উঠবে।
পশ্চিমবঙ্গে সরকারের কথা আলাদা করে না বললেও প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘জিএসটি নিয়ে আশঙ্কায় ছিল অনেক রাজ্য, লক্ষ্য দূর হলেও তাতে পৌঁছনো সম্ভব।’’ জিএসটি নিয়ে অপপ্রচার বন্ধ করারও আবেদন জানান তিনি। মোদী এদিন বলেন, পূর্ব ভারতের রাজ্যের জন্য ভাল হবে। পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যের উন্নয়নে জিএসটি বড় ভূমিকা নেবে বলেও মন্তব্য করেন মোদী। তিনি বলেন, কর বাবদ আয় কম যে সব রাজ্যের তারা এই জিএসটি যুগে উপকৃত হবে। গোটা দেশের উন্নয়ন এক ধারায় চলবে।
একেবারে শেষে ঠিক রাত ১২টায় সূচনা হয় জিএসটির। এর আগে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘জিএসটি-র জন্য সংবিধান সংশোধনী বিল আমিই পেশ করেছিলাম অর্থমন্ত্রী হিসেবে। সেই স্বপ্ন সম্ভব হওয়ায় আমি আনন্দিত।’’ এই কর সংস্কার দেশের জন্য সুদিন আনবে বলেও মন্তব্য করেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। জিএসটি চালুর জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদও জানান রাষ্ট্রপতি।
শেষে অ্যাপের মাধ্যমে সূচনা হয় জিএসটির। দেখানো হয় জিএসটি নিয়ে তৈরি একটি ছবি।