পাকিস্তানি সীমারেখার মধ্যে থাকা জঙ্গি ঘাঁটিগুলিতে চাইলেই মিসাইল দিয়ে আঘাত হানতে পারত ভারত। সেই পথে না হেঁটে আকাশপথে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের প্রায় আশি কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে আঘাত হানার কথাই বেছে নিল ভারতীয় বায়ুসেনা।
কিন্তু কেন এমন সিদ্ধান্ত? বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রাক্তন সেনাকর্তারা বলছেন, আসলে পাকিস্তানকে ভয় পাইয়ে দিতেই তাদের মাটিতে ঢুকে জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংসের পথে হাঁটল ভারতীয় বায়ুসেনা। পাকিস্তানকে বুঝিয়ে দেওয়া হলো, চাইলে তাদের মাটিতে ঢুকেই প্রত্যাঘাতের ক্ষমতা রাখে ভারত। সেই কারণেই একসঙ্গে বারোটি মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমানকে কাজে লাগিয়ে পাকিস্তানের মাটির উপরে এক হাজার কেজি বোমা ফেলার সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতীয় বায়ুসেনা ঠিক কতটা ক্ষমতার অধিকারী, চাইলে তারা পাকিস্তানের আকাশসীমার ভতিরে ঢুকে কী ধরনের আঘাত ভারত হানতে পারে, সেটাই পাকিস্তানকে বুঝিয়ে দেওয়া ছিল ভারতের লক্ষ্য। এর পরে পাকিস্তানের আরও ভিতরে ভারত আঘাত হানবে কি না, তা নিয়েই এখন চিন্তা করতে হবে পাকিস্তানকে। এই হামলা পাকিস্তানকে বুঝিয়ে দিয়েছে, ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলটরা ঠিক কতটা পারদর্শী।
প্রাক্তন সেনা কর্তারা বলছেন, ভারতের হাতে এমন ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, যা দিয়ে পাক সীমার প্রায় সত্তর থেকে আশি কিলোমিটার ভিতরেও আঘাত হানা যেত। কিন্তু সচেতনভাবেই তা করা হয়নি।
তবে এই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানও যে মুখ বাঁচাতে জবাব দিতে চাইবে, তা ধরেই নেওয়া যায়। ভারতীয় প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্থল সেনা হোক বা বায়ু সেনা অথবা নৌ সেনা— সব দিক থেকেই পাকিস্তানের বাহিনীর থেকে অনেক এগিয়ে ভারত। ফলে, পাক প্রত্যাঘাতের জন্য ভারত তৈরি বলেই আত্মবিশ্বাসী প্রাক্তন সেনা কর্তারা। পাক সরকারও ইতিমধ্যেই ভারতের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি বৈঠক ডেকেছে। এখানেই থেমে না থেকে পাকিস্তানকে সবক শেখাতে ভারত আরও বড় পদক্ষেপ করতে পারে বলেও মনে করছেন অনেক প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ।
প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে অবশ্য জানানো হয়েছে, জঙ্গি শিবিরগুলির বিরুদ্ধে পাকিস্তান ব্যবস্থা না নিলে ভারতই সেগুলিকে গুঁড়িয়ে দেবে। সেই মতো এ দিনের হানায় জইশ-ই-মহম্মদ, হিজবুল মুজাহিদিন, লস্কর-ই-তইবার মতো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির যৌথ প্রশিক্ষণ শিবিরগুলি ধ্বংস করা হয়েছে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাকিস্তান সম্ভবত ভাবেনি, তাদের সীমার এতটা ভিতরে ঢুকে আঘাত হানতে পারে ভারত। কারণ ২০১৬ সালের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের সময়েও পাক সীমার আট থেকে দশ কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করেছিল ভারত।