দীর্ঘদিনের দূরত্বকে সরিয়ে রেখে ভাই অনিল অম্বানীর সম্মানরক্ষায় এগিয়ে এলেন দাদা মুকেশ অম্বানী। একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকের খবর অনুযায়ী, মুকেশের বদান্যতাতেই এ যাত্রায় জেলে যেতে হচ্ছে না অনিলকে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সুইডিশ সংস্থা এরিকসনকে ৪৫৩ কোটি টাকা মেটাতে না পারলে দিন কয়েকের মধ্যেই জেলে যাওয়া অবধারিত ছিল অনিলের। ভাইয়ের হয়ে সেই টাকাই শোধ করে দিয়েছেন মুকেশ।
অনিল অম্বানীর সংস্থা রিলায়েন্স কমিউনিকেশনস-এর কাছে ৪৫৩ কোটি টাকা পাওনা ছিল এরিকসন-এর। এ নিয়ে দুই সংস্থার আইনি লড়াইয়ের পরে রিলায়েন্সকে বকেয়া টাকা মেটানোর নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। গত ২০ ফেব্রুয়ারি শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেয়, চার সপ্তাহের মধ্যে রিলায়েন্স কমিউনিকেশনস এই টাকা এরিকসন-কে মেটাতে না পারলে তিন মাসের জন্য জেলে যেতে হবে সংস্থার চেয়ারম্যান অনিলকে।
টাকা মেটানোর জন্য আদালতের দেওয়া সময়সীমা প্রায় শেষ হয়ে এলেও টাকা জোগাড় করতে পারেনি ধুঁকতে থাকা রিলায়েন্স কমিউনিকেশনস। অনিলের জেলযাত্রা যখন প্রায় নিশ্চিত, তখনই যাবতীয় তিক্ততা দূরে সরিয়ে রেখে ভাইকে সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন মুকেশ।
দাদার এই উদ্যোগে আপ্লুত ভাই অনিলও। বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘কঠিন সময়ে আমার পাশে থাকার জন্য আমার দাদা মুকেশ এবং নীতাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। শুধু তাই নয়, এ ভাবে আমায় সাহায্য করে আমাদের পারিবারিক মূল্যবোধকেও সময়োচিতভাবে তুলে ধরেছেন আমার দাদা। তাঁর এই উদ্যোগ আমাকে এবং আমার পরিবারকে ছুঁয়ে গিয়েছে, এর জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’’
মুকেশ এবং অনিলের মা দীর্ঘদিন ধরেই চাইতেন দুই ছেলের মধ্যে যাতে বিবাদ মিটে যায় এবং ব্যবসায় ঘুরে দাঁড়াতে অনিলকে যাতে সাহায্য করেন মুকেশ। দীর্ঘদিনের দূরত্ব দুরে সরিয়ে শেষ পর্যন্ত ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে অনিলের সংস্থার তেইশ হাজার কোটি টাকা মূল্যের যাবতীয় পরিকাঠামো কিনে নেওয়ার কথা ছিল মুকেশের সংস্থা রিলায়েন্স জিও-র। শেষ পর্যন্ত আইনি জটিলতায় তা সম্ভব হয়নি। যার জেরে এরিকসন-এর টাকা মেটানো যায়নি বলে দাবি করে অনিলের সংস্থা রিলায়েন্স আর কম।
তবে এরিকসনের দেনা মেটানোর জন্য মুকেশের সংস্থা অনিলের সংস্থাকে ধার হিসেবে নাকি অনুদান হিসেবে এই টাকা দিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এমনও হতে পারে, আর কম-এর সঙ্গে তাদের চুক্তি বাতিল হওয়ার জন্য রিলায়েন্স জিও ক্ষতিপূরণ হিসেবে এই টাকা অনিলের সংস্থাকে দিয়েছে।