‘পতঞ্জলি’ পণ্যের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে বার বার দেশসেবার কথা শোনা যায় বাবা রামদেবের মুখে। এবার সেই দেশসেবা করতে গিয়েই বড়সড় অভিযোগ উঠল বাবা রামদেবের এই সংস্থার বিরুদ্ধে।
অসমের বন্যা দুর্গতদের ত্রাণ বিলি করতে গিয়ে নতুন বিতর্কে বাবা রামদেবের ‘পতঞ্জলি’। অভিযোগ, বন্যা দুর্গতদের জন্য দুধের গুঁড়ো, ফলের রস-সহ যে খাদ্যদ্রব্যগুলি সংস্থার পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছিল, তার অধিকাংশই মেয়াদ উত্তীর্ণ।
শুধু তাই নয়, মেয়াদ পেরনো এই সমস্ত খাবার খেয়ে বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েছে বলেও অভিযোগ।
অসমের ভয়াবহ বন্যায় মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মাজুলি জেলা। সেখানেই প্রায় ১২ লক্ষ টাকার ত্রাণ পাঠিয়েছিল পতঞ্জলি। কিন্তু স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, যে খাদ্যদ্রব্যগুলি পতঞ্জলি মাজুলিতে পাঠিয়েছিল, তার অধিকাংশেরই হয় ব্যবহারের মেয়াদ পেরিয়ে গিয়েছে নয়তো কয়েকদিনের মধ্যেই সেগুলির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে।
পতঞ্জলির মাজুলি জেলার প্রধান রহিত বরুয়াও এই অভিযোগ স্বীকার করে নিয়ে দাবি করেছেন, সংস্থার পক্ষ থেকেই বন্যা দুর্গতদের জন্য এই জিনিসগুলি পাঠানো হয়েছিল।
বিষয়টি তাঁরা জানতেন না বলেও দাবি করেছেন ওই আধিকারিক। তিনি জানিয়েছেন, স্থানীয় যুবকদের একটি সংগঠনই বিষয়টি তাঁদের নজরে আনে।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরেই বন্যা দুর্গত এবং স্থানীয়দের মধ্যে প্রবল ক্ষোভ ছড়িয়েছে। সবারই প্রশ্ন, যে খাবার খেলে মানুষের শরীর খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকে, সেরকম নিম্নমানের জিনিস কেন বন্যা দুর্গতদের জন্য পাঠালো ‘পতঞ্জলি’? অনেকেরই অভিযোগ, বন্যা দুর্গতদের ত্রাণ দিয়ে প্রচার পাওয়ার জন্যই এমন কাজ করেছে পতঞ্জলি।
অভিযোগ, বন্যা দুর্গতদের জন্য দেওয়া ফলের রসের ব্যবহারের মেয়াদ ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসেই শেষ হয়েছে। যে দুধের গুঁড়োর প্যাকেট পাঠানো হয়েছিল, সেগুলির গত ৫ সেপ্টেম্বর মেয়াদ শেষ হয়েছে।
মাজুলি জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিশনার অবশ্য দাবি করেছেন, মেয়াদ পার হওয়া ওই খাদ্যদ্রব্যগুলি মানুষের মধ্যে বিলি হয়নি। পতঞ্জলিকে লিখিতভাবে অভিযোগ জানানো হয়েছে বলেও দাবি করেছেন ওই আধিকারিক।
পতঞ্জলি সংস্থার মুখপাত্র অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, মানবিকতার খাতিরেই বন্যা দুর্গতদের জন্য ত্রাণ পাঠিয়েছিল তারা। ফলে, জেনেশুনে এমন কাজ তারা করবেন না। উল্টে এমন বিপত্তির পুরো দায়টাই ডিস্ট্রিবিউটরদের ঘাড়ে চাপিয়েছে পতঞ্জলি।