দেশে তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়ন ও প্রসারের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই বেড়েছে কল সেন্টারের সংখ্যাও। কোনও সংস্থার সঙ্গে তার কাস্টমারদের সংযোগ রক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন কল সেন্টারের কর্মীরা। কাস্টমারদের অভাব-অভিযোগ শুনে তার যথাবিহিত সমাধান বাতলে দেওয়া, কিংবা তাঁদের সমস্যা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়াই কল সেন্টারের কর্মীদের কাজ। কিন্তু ফোনের ওপারে বসে থাকা তরুণ-তরুণীরা কী করেন যখন কাস্টমারদের কল আসে? সেই সত্যই সম্প্রতি উদ্ঘাটিত হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওয়।
কল সেন্টারের কাজ মোটেই সহজ নয়। ভাল কন্ঠস্বর এবং সু্ন্দর বাচনভঙ্গি এই কাজে সাফল্যের অন্যতম মূলধন। পরিশ্রমও করতে হয় যথেষ্ট। কল সেন্টারের কর্মীরা অনেক সময়েই অভিযোগ করেন, যা খাটুনি, সেই তুলনায় পারিশ্রমিক মেলে অল্পই। উপরন্তু কাস্টমারদের নানা অন্যায় বায়নাক্কাও সামলাতে হয় তাঁদের। রাগ বা বিরক্তি অনুভব করলেও খেয়াল রাখতে হয়, কন্ঠস্বরে যেন তা প্রকাশ না পায়। ব্যাপারটা মোটেই সহজ নয়।
কিন্তু যখন একজন কাস্টমারের কলে তিতিবিরক্ত হয়ে ওঠেন কল সেন্টারের এক জন কর্মী, তখন ভাষায় তাঁর বিরক্তি প্রকাশ না পেলেও শরীরের অভিব্যক্তিতে কি সেই বিরক্তি প্রকাশ পেতে পারে না? অবশ্যই পারে। আর সেই সত্যই প্রকাশ পেয়েছে ভাইরাল এই ভিডিওতে। কোনও এক কল সেন্টারে কর্মরত এক তরুণী নিজের ডেস্কের সামনে মোবাইল বসিয়ে শ্যুট করেছেন এই ভিডিও। তাতে দেখা যাচ্ছে, কাস্টমারের কল কতখানি বিরক্ত করে তুলতে পারে এক জন কল সেন্টার কর্মীকে। ফোনের অন্য পারে থাকা অদৃশ্য কাস্টমার তরুণীকে কী বলছেন, তা অবশ্য জানা যাচ্ছে না এই ভিডিওতে। কিন্তু তরুণীর মুখের অভিব্যক্তিতে স্পষ্ট ফুটে উঠছে বিরক্তি। কখনও তিনি রাগের চোটে মুখ বেঁকাচ্ছেন, কখনও বা চূড়ান্ত ক্লান্তির ভঙ্গি করছেন, কখনও বা কথা বলতে বলতেই ঠিক করে নিচ্ছেন নিজের চুল। তাঁর গলার আওয়াজে অবশ্য রাগ বা বিরক্তির চিহ্নমাত্র ধরা পড়ছে না।
এই ভিডিও ভাইরাল হতেই সোশ্যাল মিডিয়া উত্তাল হয়েছে। অনেকেই বলছেন, কল সেন্টারের কর্মীরা মুখে যতই মিষ্টত্ব বজায় রাখুন, আদপে কাস্টমারদের প্রতি বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধা নেই তাঁদের। পাল্টা দিয়েছেন, কল সেন্টারের কর্মীরাও। তাঁদের যুক্তি, এক জন কল সেন্টার কর্মীকে দিয়ে কল সেন্টারে কর্মরত লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতীর মানসিকতা বিচার উচিত নয়। তা ছাড়া কল সেন্টারে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁরাও মানুষ। কঠিন পরিস্থিতিতে কাজ করতে হয় তাঁদের। সে ক্ষেত্রে মাঝেমধ্যে তাঁদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটা অত্যন্ত স্বাভাবিক। তা ছাড়া কাস্টমারদের কাছ থেকে নানা অন্যায় এবং অশোভন প্রস্তাবও মুখ বুজে সহ্য করতে হয় তাঁদের। সুতরাং দোষ একতরফা তাঁদের নয়।
ভিডিওতে যাঁকে দেখা যাচ্ছে, তাঁর নাম স্বাতী। কিন্তু কোন কোম্পানির হয়ে তিনি কাজ করছেন, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় অবশ্য অনেকে দাবি করেছেন, সংশ্লিষ্ট তরুণী একটি অনলাইন শপিং সংস্থার কর্মী।
আপনিও দেখুন সেই বিতর্কিত ভিডিও