নতুন করে খুব যে কিছু বলার আছে তা নয়, নব্যযুবক-যুবতীদের কাছে বসন্ত পঞ্চমী তিথির মূল আকর্ষণটি যে কী, তা সবাই জানেন। হ্যাঁ, পাঞ্জাবি-শাড়ি নিয়ে মাতামাতি আছে, বাছাবাছি আছে, ইস্কুলে-ঘরেদোরে কিছু তোড়জোড় আছে। কিন্তু এ সবই নিমিত্ত মাত্র! ‘ঝাড়ি’-ই হল সেই ‘পরম সত্য’।
তা বলে ‘ঝাড়ি’ কি খারাপ নাকি? কে বলল? মানুষ মানুষকে দেখবে, তার সাজগোজের প্রশংসা করবে, এটাই সহজ স্বাভাবিক। চোখে চোখ পড়লে মুখ ঘুরিয়ে, নাক সিঁটকিয়ে চলে যাওয়াটা কি ভদ্রতা না কি? তবে হ্যাঁ, কিছু সাবধানতা মেনে চলাই উচিত। তেমনই দু’একটি নিয়ে দু’চারকথা বলে রাখা ভাল—
১. ঝাড়ি মানে কিন্তু ‘আই স্টকিং’ নয়, এই সূক্ষ্ম পার্থক্যটা বুঝতে হবে। অর্থাৎ চোখের দিকে তাকবেন, দৃষ্টি যেন পা পিছলে অন্যদিকে না যায়। মেয়েরা কিন্তু এই ব্যাপারে খুব সংবেদনশীল।
২. চোখাচোখি থেকে বিষয়টা কথাবার্তা পর্যন্ত এগোতেই পারে কিন্তু দুম করে কখনওই নয়। আপনি হয়তো খুবই স্পষ্টবাদী, মনের কথা খুব বেশিক্ষণ চেপে রাখতে পারেন না, কিন্তু সময় নিতে হবে। না হয় পুজোর দিনে শুধু দেখাদেখিটুকুই হল। বাকিটা খোঁজ-খবর করে রাখুন, পরে যোগাযোগ করুন। কিন্তু যদি উল্টোদিক থেকে খুব একটা আগ্রহ না থাকে, তবে সেই তিনি ভাবতে পারেন যে, এটা নেহাত ‘ছকবাজি’, প্রেমে পড়া নয়।
৩. প্রথম মৌখিক আলাপটা বন্ধুবান্ধবদের উপস্থিতিতেই করা ভাল। তাতে অন্য পক্ষ বেশ স্বস্তিতে থাকবেন। তবে একা কোনও মেয়ের সঙ্গে আবার আপনার দলবল নিয়ে কথা বলতে যাবেন না। কিশোরী-তরুণীরা ভয় পেয়ে যাবেন। সবচেয়ে ভাল হল, দু’দলের মধ্যে যৌথ আলাপচারিতা। তার পরে না হয়, একান্তে কথা বলা যাবে।
৪. আলাপ হওয়া মাত্র ঝটপট সেলফি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করবেন না। ওটা হল ‘আদেখলাপনা’। সেলফি বা ছবি তুলতে বাধা নেই কিন্তু আপলোড করতে সময় নিন। আত্মসম্মান বজায় রাখুন।
৫. একটি সিরিয়াস সতর্কবার্তা মেয়েদের জন্য— যদি ইচ্ছার বিরুদ্ধে কেউ জোর করে ছবি বা ভিডিও তুলতে যায়, তাকে উচিত শিক্ষা দিতে একটুও দেরি করবেন না! ভাললাগার মানুষকে সুন্দর ভাবে দেখা এক জিনিস আর তাকে বিকৃত মানসিকতা থেকে ‘ভোগ’ করতে চাওয়ার ইচ্ছা আর এক!
৬. সরস্বতী পুজোর দিনটা কিন্তু ঝাড়ি এবং আলাপ দিবস। প্রেম নিবেদনের নয়। ভুলেও এইদিন প্রোপোজ করে বসবেন না। কারণ আপনি নিজেও জানেন না এটা কি নেহাতই ক্রাশ, নাকি সত্যি প্রেমের সূত্রপাত। ক্রাশ হলে এটা কেটে যাবে আর তার আগেই প্রোপোজ করে ফেললে পুরো বিষয়টা ‘বাঁশ’-এ পরিণত হবে।
৭. শেষ সতর্কবার্তা— দিনটা আপনার কাছে ‘ঝাড়িদিবস’ হলেও আসলে তো বাগদেবীর আরাধনার দিন। যত যাই হোক না কেন, প্লিজ মনে মনে দেবী সরস্বতীকে বলে বসবেন না যেন, মা একটু দেখো, প্রেমটা যেন হয়! বরং অঞ্জলির সময়ে দেবীর কাছে একটু বিদ্যাবুদ্ধি চান। ও দুটো থাকলে, প্রেম-সম্পর্ক— সবই ভাল হবে।