ডার্বিতে মাঠে নামলেই গ্যালারি কোরাস গাইত, ‘ওরে তোরা সামলা/গোল করবে আমনা।’ তাঁর পায়ে বল পড়লেই কেঁপে যেত প্রতিপক্ষ ডিফেন্স। সমর্থকদের বুক দুরদুর, উত্তেজক আবহের বাসিন্দা ছিলেন তিনি। সেই গ্রহ থেকে আপাতত ছিটকে গিয়েছেন। মাহমুদ আল আমনা এখন অতীত কলকাতায়। ডার্বিতে এবার আলোচনাই নেই সিরিয়ান মিডিওকে নিয়ে। শহর ছেড়ে আমনা চণ্ডীগড়ে পাড়ি দিয়েছেন। যোগ দিয়েছেন মিনার্ভায়।
অভিমান চেপে আমনা তবু টিভিতে চোখ রাখবেন রবিবার। তবে এখানেই ধর্মসঙ্কট তাঁর সামনে। একদিকে, তাঁর প্রিয় ক্লাব ইস্টবেঙ্গল। তাঁর রক্ত, ঘাম জমা হয়েছে যে ক্লাবের জার্সিতে। আঠারো মাস ধরে। অন্যদিকে, কোচ খালিদ। ভারতে যাঁকে প্রকাশ্যেই নিজের ‘গডফাদার’ বলে থাকেন। খালিদ-আমনা জুটি আইজলে ফুল ফুটিয়েছিল। আইলিগ জয়ের টিকিট হাতে নিয়েই ইস্টবেঙ্গলের বাসিন্দা হয়েছিলেন কোচ-ফুটবলার। এখন অবশ্য দু’জনেই ব্র্যাত্য।
খালিদ পড়শি ক্লাবের হটসিটে। আমনা শহরই ছেড়ে দিয়েছেন। এত অভিমান চেপে ফোনে সিরিয়ান মিডফিল্ডার ডার্বির আবহে বলে দেন, ‘‘কাকে সমর্থন করব এখনও জানি না। তবে ইস্টবেঙ্গলের জন্য আমি এখনও দুর্বল।’’ আর কোচ খালিদ? খানিকটা নিশ্চুপ থাকেন। তারপরে বলেন, ‘‘খালিদ দারুণ কোচ।’’
ডার্বিতে ফেভারিট কে? প্রশ্ন শুনে মিতবাক আমনার মাপা উত্তর, ‘‘ম্যাচ ৫০-৫০। তবে ইস্টবেঙ্গলই জিতবে, দেখে নিন।’’
এই শহর যন্ত্রণা উপহার দিয়েছে আমনাকে। চোটের পরে ফিরে আসার সুযোগ পেয়েছেন সনি। আমনাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকেই ফেরার চ্যালেঞ্জ নিচ্ছেন তিনি। ফোন রাখার আগে তাঁর জবাব, ‘‘কলকাতা ইজ গুড সিটি। তবে এখন আমাকে ফিরতে হবে।’’ প্রমাণ করার তাগিদ নিয়েই পুরনো ক্লাবের রূদ্ধশ্বাস যুদ্ধের শরিক হবেন তিনি, বহুদূর থেকে।