ইস্টবেঙ্গল — ১ এফ সি গোয়া — ০
(ডুডু)
একেই বোধ হয় বলে পোয়েটিক জাস্টিস! সুপার কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে আইজলের বিরুদ্ধে গোলের পর গোল নষ্ট করে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের তীব্র ব্যারাকিংয়ের মুখে পড়তে হয়েছিল ডুডু ওমাগবেমিকে। কলকাতায় এসে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিলেন বহু যুদ্ধের নায়ক। বলেছিলেন, বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য করা হয়েছে তাঁকে। সমর্থকদের উপরে অভিমান করে অনুশীলনে নামেননি। প্রায় নিত্যিদিনই বিঁধেছিলেন লাল-হলুদ সমর্থকদের। বলেছিলেন, ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা তাঁর দেখা নিকৃষ্ট সমর্থক।
সোমবার সেই ডুডুই ইস্টবেঙ্গলকে নিয়ে গেলেন সুপার কাপের ফাইনালে। তিনিই হয়ে উঠলেন ত্রাতা। গোয়ার জালে বল জড়িয়ে উচ্ছ্বাসে মাতলেন না। অনেক অভিমান যে জমে রয়েছে ডুডুর মনে! সতীর্থদের অভিনন্দনে ভেসে গেলেন তিনি। সমর্থকরা গ্যালারিতে জার্সি ওড়ালেন। কিন্তু তিনি ডুডু ওমাগবেমি নীরব, নিস্পৃহ। কোনও কিছুই তাঁকে আর ছুঁয়ে যাচ্ছে না। এভাবে তো কোনওদিন ডুডুকে দেখা যায়নি। বরাবরই গোল করে উৎসবে মাততেন তিনি। সতীর্থদের গোলেও উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠতেন তিনি। কিন্তু সেই মানুষটাই আজ ছিলেন কার্যত নিরুত্তাপ।
সোমবার অচেনা, অদেখা ডুডু ধরা দিলেন অন্য অবতারে। কাটসুমির গড়ানো ক্রস থেকে ছোঁ মেরে গোল করে গেলেন ইস্টবেঙ্গলের নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকার। এফসি গোয়ার ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিতে গিয়ে পায়ে টান লাগল। গোলের পরক্ষণেই মাঠ ছাড়লেন বহুযুদ্ধের সেনানী। তার আগে অবশ্য গোলের সোনার সুযোগ নষ্ট করেছেন এই ডুডুই। এদিন গোল না পেলে আরও ব্যথা ছিল ডুডুর। ফুটবল-ঈশ্বর আজ তাঁর সহায়।
৭৯ মিনিটে ডুডু এগিয়ে দেন ইস্টবেঙ্গলকে। তার পর আর সমতা ফেরাতে পারেনি গোয়া। তবে তার আগেই একের পর এক গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল ইস্টবেঙ্গল। কাট্টিমানি প্রতিবারই দেওয়াল হয়ে ওঠেন। গোয়াও যে গোলের সুযোগ পায়নি তা নয়। কোরোর ফ্রি কিক ইস্টবেঙ্গলের পোস্টে আছড়ে পড়ে। প্রথমার্ধে কোরো একাই তিন জন ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্ডারদের মাটি ধরিয়ে প্রায় গোল করে ফেলেছিলেন। কিন্তু ভাগ্যলক্ষ্মী যে সহায় ছিল ইস্টবেঙ্গলের। মোক্ষম সময়ে জ্বলে উঠলেন ডুডু। গোল করে তিনি মোক্ষম জবাব দিয়ে গেলেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের।