বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচেই মুখোমুখি উরুগুয়ে ও মিশর। চোট সারিয়ে খেলতে পারলে মহম্মদ সালাহ বনাম লুইস সুয়ারেজ দ্বৈরথ দেখার অপেক্ষায় গোটা বিশ্ব। কিন্তু, তাৎপর্যপূর্ণভাবে শুক্রবারের মহারণে সুয়ারেজ, কাভানি কিংবা মহম্মদ সালাহ নন, চোখ থাকবে একজনের উপরেই। তিনি অস্কার তাবারেজ।
উরুগুয়ের বর্ষীয়ান কোচই ইতিহাস গড়তে চলেছেন সকলের অলক্ষ্যে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ইয়েকাতারিনবার্গে তাবারেজকে দেখা যাবে ডাগ আউটে, প্রধান কোচের জোব্বা গায়ে। তবে সাধারণভাবে নয়, একেবারে হুইলচেয়ারে করে। জটিল স্নায়ুরোগে ভুগছেন ৭১ বছরের কোচ। ডাক্তারি পরিভাষায় বলা হচ্ছে, ক্রনিক গুলেইন বারে সিনড্রোম রোগে আক্রান্ত তিনি। এই প্রথমবার বিশ্বকাপে কোনও কোচকে দেখা যাবে হুইলচেয়ারে বসে কোচিং করাতে।
হুইলচেয়ারে কোচিং করাচ্ছেন অস্কার তাবারেজ। — এএফপি
উরুগুয়েতে তিনি পরিচিতি ‘এল মায়েস্ত্রো’ (প্রোফেসর) নামে। অগাধ ফুটবল পাণ্ডিত্যে তিনি সম্ভ্রম আদায় করে নেন সর্বত্র। রাশিয়ায় এসেছেন কোচ হিসেবে চতুর্থবারের জন্য বিশ্বকাপে।
নিজে বার্ধক্যজনিত স্নায়ু রোগে ভুগলেও সরে দাঁড়াননি লা সেলেস্ত্রে-র কোচের পদ থেকে। গত ব্রাজিল বিশ্বকাপের পরেই উরুগুয়েতে রব উঠেছিল তাবারেজের পরিবর্ত হিসেবে নতুন কোনও কোচকে নিয়োগ করার জন্য। তবে সেই সময়ে কোচের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সুয়ারেজ, গডিন, কাভানিদের মতো তারকারা। তাবারেজকে নিয়ে এক ডকু ফিল্মে সুয়ারেজ স্বয়ং বলেছিলেন, ‘‘আমরা সকলেই জানি কোচিং করানোর জন্য এল মায়েস্ত্রোকে চিৎকার করতে হয়না। তিনি এটা ভালভাবেই সামলে নেবেন।
তাবারেজও বারেবারেই জানিয়েছেন, তাঁর শারীরিক অবস্থা কখনই তাঁর কোচিংয়ের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে না। নিজের দেশের এক সংবাদমাধ্যমে তাবারেজ বলেন, ‘‘চিকিৎসকদের ফিজিওথেরাপি ও ট্রিটমেন্টের উপরেই সমস্ত কিছু ছেড়ে দিয়েছি।’’
দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে উরুগুয়ে সেমিফাইনালে উঠেছিল তাবারেজের কোচিংয়েই। তারপরের বছরেই ২০১১১ সালে দেশকে কোপা আমেরিকা খেতাব জিতিয়েছিলেন প্রোফেসর। শারীরিক অসুস্থতা নিয়েই তাবারেজ এবার দেশকে নয়া সম্মান এনে দিতে পারেন কিনা, তা তো সময়েই বলবে। তবে, যাই হোক, টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই উরুগুয়ের স্কুল শিক্ষক যে বিশ্বকাপের ইতিহাসে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।