ধন্যি এই দেশ! এখনও কত পিছনে যে পড়ে রয়েছে ভারত, তা চোখে আঙুল দিয়ে যেন দেখিয়ে দিলেন পিভি সিন্ধু। রিও অলিম্পিক্সে নারীশক্তির উত্থান দেখা গিয়েছে। সব অর্থেই ভারতের মেয়েরা ছেলেদের থেকে ভাল পারফরম্যান্স করেছেন ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন দ্য আর্থ’-এ। শুরুটা করেছিলেন আগরতলার দীপা কর্মকার। শেষটা করেছেন হায়দরাবাদের পিভি সিন্ধু। মাঝে সাক্ষী মালিক ব্রোঞ্জ জিতে দেশকে প্রথম পদক এনে দেন। অল্পের জন্য পদক হাতছাড়া করেন দীপা। চতুর্থ হয়ে শেষ করেন তিনি। ব্যাডমিন্টনের ফাইনালে পিভি সিন্ধু প্রবল লড়ে হার মানেন স্পেনের ক্যারোলিনা মারিনের কাছে। রুপো-জয়ী সিন্ধুকে নিয়ে মাতোয়ারা গোটা ভারত। তাঁর রাজ্য পুরস্কার ঘোষণা করে দিয়েছে। এত কিছুর মধ্যে দেশের অন্ধকার দিকটাও ফুটে উঠেছে।
এই দেশ এখনও ভিত্তিহীন বিষয় নিয়ে মেতে থাকতে পছন্দ করে। পিছনের সারিতে পড়ে থাকে মানুষের আসল পরিচয়। সামনের দিকে না-হেঁটে এই পোড়া দেশ পিছনে হাঁটছে। তাই সিন্ধুর খেলোয়াড়ী সত্তা পড়ে থাকে ব্যাকসিটে। মানুষজনের কৌতূহল বেশি সিন্ধুর জাত নিয়ে। ব্যাডমিন্টন ফাইনালের আগে থেকেই সিন্ধুকে নিয়ে দেশে মাতামাতি শুরু হয়েছিল। গুগল সার্চ ইঞ্জিনে হায়দরাবাদি কন্যাকে সর্বাধিক সার্চও করা হয়। জানেন বেশিরভাগ মানুষ কী খুঁজেছেন? জবাবটা শুনলে বিস্মিত হবেন অনেকেই। সার্চ ইঞ্জিনে মানুষ জানতে চেয়েছেন, কোন জাতের মেয়ে পিভি সিন্ধু। জাতপাত নিয়ে এখনও আচ্ছন্ন এই দেশ। সিন্ধুর রাজ্য তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশের মানুষই সিন্ধুর জাতপাতের খোঁজ নিয়েছেন সব চেয়ে বেশি। কেরিয়ার, তাঁর পরিসংখ্যান নিয়ে মানুষের জানার ইচ্ছা তুলনায় বেশ কম। স্বাধীনতার এত বছর বাদেও মানুষের মন থেকে উপড়ে ফেলা যায়নি জাতপাতের শিকড়। তা এখনও খুবই গভীরে প্রোথিত। সিন্ধুর রুপো জয় আবারও তা দেখিয়ে দিল।
আরও পড়ুন
স্বাধীনতা দিবসের সরকারি অনুষ্ঠানে নাজেহাল হন সিন্ধু,সাক্ষীরা। কী হয়েছিল?
রুপো-জয়ী সিন্ধু ঘরে ফিরে যা যা পাবেন, তা অনেককেই ঈর্ষান্বিত করবে
মনের কথা সিন্ধুকে বলেই ফেললেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া