বদলা নেওয়ার খবরে তৃপ্ত দেশ। তিনি কিন্তু নিজের অবস্থানেই অনড়। স্বামীর মৃত্যুর খবর পেয়েও যে কথা বলেছিলেন, আজও সেকথা বলছেন হাওড়ার বাসিন্দা শহিদ বাবলু সাঁতরার স্ত্রী মিতা সাঁতরা। সদ্য স্বামীকে হারানো মিতাদেবী এখনও বলছেন, বদলা তিনি চান না। কারণ, বদলা মানেই যে কারও না কারও কোল খালি হবে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামার আত্মঘাতী জঙ্গি হামলায় শহিদ হন হাওড়ার বাউড়িয়ার বাবলু সাঁতরা। ভয়াবহ সেই জঙ্গি হামলার পর থেকেই বদলা নেওয়ার দাবি উঠেছিল গোটা দেশে। একই দাবি ছিল শহিদদের পরিবারগুলির। যদিও শোকের আবহেও অন্য কথা বলেছিলেন মিতাদেবী। সেদিনের মতো মঙ্গলবারও পাক মাটিতে ভারতীয় বায়ুসেনার হামলার প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সরকার ঠিক মনে করেছে বলে এই পদক্ষেপ করেছে। বদলা চাই, এ কথা আমি বলতে পারব না। আমি শুধু চাই নিরীহ মানুষ যে যন্ত্রণা ভোগ করছেন, তা থেকে যেন মুক্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করে সরকার। আমি যে যন্ত্রণা ভোগ করছি, ওপারের কারও কোল খালি হলে তাঁরও একই অনুভূতি হবে।’’
সরকার যেন মাথায় রাখে, জওয়ানরাও কারও স্বামী, কারও বাবা, কারও ছেলে। তাঁদের নিরাপত্তা যেন সুনিশ্চিত করার ব্যবস্থা করে সরকার। মিতাদেবীর অভিযোগ, সেদিন জওয়ানদের নিরাপত্তা আরও আঁটোসাঁটো করলে হয়তো আত্মঘাতী জঙ্গি হানার ঘটনা এড়ানো যেত। তাঁর স্বামীকেও হারাতে হতো না তাঁকে। মা যখন এ কথা বলছে, তখন তাঁর পাশে চুপচাপ বসে আছে বাবলু সাঁতরার ছ’ বছরের ছোট্ট মেয়ে পিয়াল। বাবা যে চিরঘুমে গিয়েছেন, সেটাই এখনও সে ভালভাবে বুঝে উঠতে পারেনি। বদলা, প্রতিশোধের মতো বিষয়গুলি বোঝা তার কাছে আরও কঠিন।
দেখুন ভিডিও
এ দিনই আইজি সিআরপিএফ (ওয়েস্ট) জি রবিন্দর বাবলু সাঁতরার হাওড়ার বাড়িতে তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান। তিনি জানান, সিআরপিএফ শহিদ জওয়ানের পরিবারের পাশেই রয়েছে। পরিবারের সদস্যের চাকরি থেকে শুরু করে আর্থিক সমস্ত সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সিআরপিএফ-এর পক্ষ থেকে এ দিন বাবলু সাঁতরার পরিবারকে সেই আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।