মিটিং-মিছিলের ‘উপদ্রবে’ পাখিরা ভয় পেতে পারে, এই আশঙ্কায় ভেস্তে যেতে বসেছিল পাখিদের আসরের পরিকল্পনা!
কিন্তু এবার আর মিটিং-মিছিল নেই। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি কলেজ স্কোয়্যারে কোনও রকম মিটিং-মিছিলের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। পাখিদেরও আর ‘ভয়’ পাওয়ার কোনও কারণ নেই বলে মনে করছেন অনেকে। তাই কলেজ স্কোয়্যারে প্রস্তাবিত বিদেশি পাখির আস্তানা তৈরির কাজ নিয়ে ফের তো়ড়জোড় শুরু হয়েছে। চলতি মাসেই বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পুর অফিসে বৈঠক হওয়ার কথা।
প্রসঙ্গত, গত বছরই পাখিপ্রেমীদের একটি সংস্থা কলেজ স্কোয়্যারে বিদেশি পাখির স্থায়ী আস্তানা করার প্রস্তাব দিয়েছিল কাউন্সিলর স্বপ্না দাসের কাছে। স্বপ্না তাতে রাজিও হয়ে যান। সেইমতো ওখানে আট ফুট বাই বারো ফুটের ১২টি খাঁচা তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। ওই খাঁচাগুলিতে ম্যাকাও, অ্যাফ্রিক্যান গ্রে প্যারোট, কাকাতুয়া-সহ অন্য পাখি রাখাও ব্যাপারেও প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়।
কিন্তু কলেজ স্কোয়্যারে যে হারে মিটিং-মিছিল হয়, তাতে সেখানে আস্তানা তৈরি হলে পাখিদের অসুবিধা হতে পারে, সেকথা ভেবেই পিছিয়ে আসে ওই সংস্থা। ওই সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক দেবব্রত আকুলী বলেন, ‘‘খুব জোরে আওয়াজে পাখিদের অসুবিধা হয়। মাইকে খুব জোরে আওয়াজ পাখিরা নিতে পারে না। ফলে মিটিং-মিছিল বন্ধ হওয়াতে পাখিদেরই সুবিধা। দুর্গাপুজোর আগেই প্রকল্পের কাজ শেষ করার চেষ্টা করব।’’ স্বপ্না বলেন, ‘‘যেভাবে মিটিং-মিছিল হতো, তাতে পাখিদের আস্তানা তৈরি হলে তারা শান্তিতে থাকতে পারত না। মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ কলেজ স্কোয়্যারে ওসব বন্ধ করার জন্য। আগামী সপ্তাহেই বিষয়টি চূড়ান্ত করার জন্য বৈঠক করব।’’
হঠাৎ জমায়েতে বিদেশি পাখিদের যে ‘অস্বস্তি’ হয়, সে কথা বলেছেন শহরে বিদেশি পাখির অন্যতম ব্যবসায়ী রজত চক্রবর্তীও। রজত বলেন, ‘‘হঠাৎ করে অনেক লোক জমায়েত হল, হট্টগোল হল, তাতে খাঁচার পাখিদের তো অসুবিধা হয়ই।’’ যদিও পাখি বিশারদ তথা কেন্দ্রীয় বন্যপ্রাণী উপদেষ্টা পর্ষদের প্রাক্তন সদস্য কুশল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিদেশি পোষা পাখিদের অতিরিক্ত জমায়েতে বা আওয়াজে অসুবিধা হয় বলে মনে হয় না। কারণ, তারা মানুষের সঙ্গেই বসবাস করে।’’