প্রসঙ্গত, সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র জানিয়েছিলেন, আক্রমণ যত তীব্র হবে, প্রতিবাদ তত জোরাল হবে। এদিন আসানসোলের বারাবনিতে মিছিল থেকে বাম কর্মী-সমর্থকেরা তৃণমূল সমর্থকদের উপর হামলা চালান বলে অভিযোগ। এমনকী, পুলিশের উপরেও হামলার অভিযোগ উঠেছে বামেদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরই যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং ফিরহাদ হাকিম। সেই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সন্ত্রাসের দিন ফিরিয়ে আনতে দেওয়া যাবে না। জনগণ প্রতিবাদ করবে। প্রশাসনও ব্যবস্থা নেবে। বারাবনি, বাগদা, তারকেশ্বরে পুলিশকে আক্রমণ করা হয়েছে’।
এদিন বেলা ১১টা নাগাদ বারাবনির পানুরিয়া মোড় দিয়ে যাচ্ছিল বামেদের মিছিল। সেসময় সেখানে ছিলেন কয়েকজন তৃণমূলকর্মী। শাসকদলের অভিযোগ, হঠাৎই বামেদের মিছিল থেকে তাদের কর্মীদের আক্রমণ করা হয়। ভাঙচুর করা হয় কয়েকটি মোটরসাইকেল। ঘটনাস্থলেই ছিল বারাবনি থানায় পুলিশ। এএসআই উত্তম পালকেও বাম কর্মী-সমর্থকেরা মারধর করেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় সাধন বাউড়ি নামে এক সিপিএম সমর্থককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। স্থানীয় সিপিএম নেতা শ্রীধর রাউত হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
জামুড়িয়ার বালানপুর থেকে স্থানীয় বিধায়ক জাহানার খানের নেতৃত্বে মিছিল বার করে বামেরা। অভিযোগ, মিছিল শুরুর পরই শাসকদলের কর্মী-সমর্থকেরা চড়াও হন। তৃণমূল নেতৃত্বের পাল্টা অভিযোগ, মিছিল থেকে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে অশ্লীল মন্তব্য করা হয়।
হুগলির তারকেশ্বরেও বামেদের মিছিলে আক্রমণের অভিযোগ উঠেছে। রামনগর থেকে বেরিয়েছিল মিছিল। সিপিএমের জোনাল কমিটির কার্যালয়ের কিছুটা আগে ওই মিছিলে তৃণমূল হামলা চালায় বলে অভিযোগ। সিপিএমের তারকেশ্বর জোনাল কমিটির সম্পাদক নিশীথ মালি-সহ কয়েকজন দলীয় কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। অভিযোগ, এরপর ওই কার্যালয়ে গিয়ে তৃণমূলের সমর্থকেরা ব্যানার, ফ্লেক্সে আগুন লাগিয়ে দেন। ওই সময় সেখানে ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ তথা সিপিএম নেতা শক্তিমোহন মালিক। তারকেশ্বর থানায় খবর দেওয়া হলেও পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল বলে অভিযোগ। পরে অবশ্য সিপিএম জেলা নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে পৌঁছয় পুলিশ। তৃণমূল পরিচালিত তারকেশ্বর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম কুণ্ডুর পাল্টা অভিযোগ, মিছিল থেকে হামলা চালিয়েছে বামেরা। যথারীতি সে অভিযোগ মানতে চাননি বাম নেতৃত্ব। পূর্ব মেদিনীপুরের মুগবেড়িয়াতেও হামলা হয়েছে বামেদের মিছিলে।
এদিনের ঘটনাগুলি সম্পর্কে যৌথ বিবৃতিতে পার্থ-ফিরহাদ জানিয়েছেন, ‘মিটিং, মিছিল করার অধিকার সকলের রয়েছে। কিন্তু তার আড়ালে সন্ত্রাস সৃষ্টির চক্রান্ত বরদাস্ত করা হবে না’। আর বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলছেন, ‘‘ওরা (তৃণমূল) ভেবেছিল পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি করে মানুষকে ঠান্ডা করে রেখে দেবে।’’
শীত আসছে। উত্তাপ বাড়ছে রাজনীতির।