এপ্রিলের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে হুগলি নদীর সীমানা ছুঁতে পারে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো’র সুড়ঙ্গ! অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে হাওড়া স্টেশনের পরিসর পেরনোর কাজ চলছে জোড়া সুড়ঙ্গে।
প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত এক আধিকারিকদের দাবি, পূর্বদিকের (ইস্ট-বাউন্ড টানেল) সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ প্রথমে দ্রুত এগোলেও ডিআরএম বিল্ডিংয়ের ঠিক আগে আপাতত কাজ থমকে রয়েছে। পাশের পশ্চিমপ্রান্তের সুড়ঙ্গ (ওয়েস্ট বাউন্ড টানেল) খোঁড়ার কাজ এখনও হাওড়া স্টেশন চত্বরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তিনি বলেন, ‘‘ব্যস্ত হাওড়া স্টেশন চত্বরের সুরক্ষার কথা ভেবেই বাড়তি সতর্কতা নিতে হচ্ছে। একসঙ্গে দু’টি সুড়ঙ্গের কাজ না চালিয়ে পর্যায়ক্রমে দু’টি সুড়ঙ্গের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ফলে দু’টি সুড়ঙ্গকে নদী পর্যন্ত নিয়ে যেতে আরও অন্তত দু’সপ্তাহ লাগবে।’’
প্রকল্পের দায়িত্ব থাকা কেএমআরসিএলে’র (কলকাতা মেট্রোরেলওয়ে কর্পোরেশন লিমিটেড) চিফ সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বিশ্বনাথ দেওয়ানজি বলেন, “হাওড়া স্টেশন অতিক্রম করে সুড়ঙ্গ নদীর মুখে পৌঁছলে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মেশিন দু’টিকে বেশ কিছুদিন বিশ্রাম দেওয়া হবে। কারণ, ৫২০ চওড়া নদীবক্ষের মাঝে সুড়ঙ্গের কাজ চলাকালীন মেশিনে ত্রুটি দেখা দিলে মেরামত করা কষ্টসাধ্য”।
কেএমআরসিএল সূত্রের খবর, সুড়ঙ্গ খোঁড়ার পুরো প্রক্রিয়াটিই কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত। ‘আর্থপ্রেশার ব্যালান্স’ প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে কাজ হচ্ছে। ভূ-পৃষ্ঠের সাড়ে চারগুণ বেশি বায়ুমণ্ডলীয় চাপ সইতে পারে, এমন ক্ষমতার ইস্পাতের তৈরি টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) ব্যবহার হচ্ছে এই কাজে। টিবিএমের সামনের ‘টাংস্টেন-কার্বাইড ব্লেড’ মাটি কেটে এগিয়ে যাচ্ছে। আর পিছনের অংশে ভ্যাকুয়ম লিফটারের সাহায্যে কংক্রিটের ছ’টি প্রি-ফ্যাব্রিকেটেড স্ল্যাব জুড়ে তৈরি হচ্ছে সাড়ে পাঁচ মিটার ব্যাসের সুড়ঙ্গের বৃত্তাকার দেওয়াল।
স্ল্যাবের জোড়ের মুখে নিওপ্রিন এবং হাইড্রোফিলিক রাবারের গ্যাসকেট। উচ্চ তাপে অবিকৃত থাকে নিওপ্রিন। আর জলের স্পর্শে হাইড্রোফিলিক রাবার প্রসারিত হয়ে কংক্রিটের জোড়ের মুখ আরও এঁটে বসে। ফলে জল চুঁইয়ে পড়ার সম্ভাবনা প্রায় থাকে না। সুড়ঙ্গের কংক্রিটের দেওয়াল এবং মাটির মধ্যের ফাঁক ভরাট করা হচ্ছে কুইক ফিক্সিং কংক্রিট এবং বিভিন্ন রাসায়নিকের মিশ্রণ দিয়ে। মাটির চাপে টানেলের দু’পাশে সরে যাওয়া (ল্যাটারাল মুভমেন্ট ) ঠেকাতেই
এই ব্যবস্থা।