ডেঙ্গি প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য পুজো কমিটিগুলিকে পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ। ‘স্বাস্থ্য-বান্ধব সম্মান’ পুরস্কার কলকাতায় এই প্রথম। বিভিন্ন ওয়ার্ডের পাড়ায় পাড়ায় ছোট অথবা বড় পুজোর সংগঠকেরা মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে যাতে উদ্যোগী হন, সেই কারণেই
এই পদক্ষেপ।
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘পুজোর সময়ে ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা অভিযান হয় না। সকলে পুজোর আনন্দে মেতে থাকেন। সেই সময়ে যাতে প্রচার সচল থাকে সেই কারণে পুজো কমিটিগুলিকেও কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাঁরা শুধু মণ্ডপের সামনেই সচেতনতার শিবির তৈরি করবেন তা নয়, এলাকার বাড়ি বাড়ি ঘুরে ডেঙ্গি সম্পর্কে পুজোর দিনগুলিতে সচেতনতা অভিযান জারি রাখবেন।
পুরস্কারের ক্ষেত্রে নিয়ম কী? স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, পুরসভার ১৬টি বরোকে দু’টি করে একত্রিত করে একটি অঞ্চল বা জোন হিসাবে ভাগ করা হবে। ফলে শহরে মোট ৮টি জোন থাকবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে এই বিষয়ে গঠিত একটি কমিটি পুজোগুলিকে বিচার করে নম্বর দেবে। প্রাথমিক পর্যায়ের বিচারের ভিত্তিতে প্রতিটি বরো থেকে পাঁচটি পুজোকে মনোনীত করা হবে চূড়ান্ত পর্যায়ের জন্য। এরপর চূড়ান্ত পর্যায়ে এক একটি জোনে তিনটি করে পুজোকে বাছাই করে পুরস্কার দেওয়া হবে।
প্রতিটি পুরস্কার মূল্য ৩০,০০০ টাকা বলেও এক পুর আধিকারিক জানান। প্রতিযোগিতায় পুরস্কার প্রাপ্তির প্রধান শর্ত— মণ্ডপে কোথাও জল জমিয়ে রাখা যাবে না। পুজো কমিটিগুলি ৪ এবং ৫ অক্টোবর নিজ নিজ এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালাবে। প্রচারের প্রমাণস্বরূপ ভিডিও ক্লিপিং ও ফটো সিডি আকারে জমা দিতে হবে। প্রচার সামগ্রী কলকাতা পুরসভা বিনামূল্যে পুজো কমিটিগুলিকে সরবরাহ করবে। পঞ্চমীর দিন পুরস্কার ঘোষণা করবে কলকাতা পুরসভা। এছাড়াও প্রতিটি ‘জোন’ থেকে তিনটি করে পুজো বেছে নেওয়া হবে ‘মহানাগরিকের পছন্দ’ শীর্ষক পুরস্কারের জন্য। পুরসভা এই প্রতিযোগিতার জন্য কোনও ‘স্পনসর’ নিচ্ছে না। মেয়র পারিষদ জানান, ১৮ সেপ্টেম্বর (অর্থাৎ, মঙ্গলবার থেকে) থেকে ২৪ তারিখের মধ্যে অংশগ্রহণের জন্য আবেদনপত্র প্রত্যেকটি পুজো কমিটিকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসবে’র পক্ষে সহ-সভাপতি কাজল সরকার বলেন, ‘‘এই উদ্যোগ অত্যন্ত ভাল। ডেঙ্গি একটি গুরুতর সমস্যা। এর জন্য সচেতনতা প্রয়োজন। পুজো কমিটি ইচ্ছাতেই হোক কিংবা অনিচ্ছাতে, পুরস্কারের দিকে তাকিয়ে থাকে। পুরসভার এই উদ্যোগের ফলে দু’টি দিকই সমানভাবে গুরুত্ব পাবে।’’