বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া সফরে গিয়ে লাগদা গ্রামে যে পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছিলেন বিজেপির জাতীয় সভাপতি অমিত শাহ, সেই পরিবারের সদস্যরাই শুক্রবার কলকাতায় এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে যোগ দিলেন।
হেলিপ্যাড থেকে অমিত শাহ গ্রামের কয়েকটি পরিবারের সঙ্গে ‘সম্পর্ক অভিযান’ করতে যান। পুরুলিয়ায় যেখানে বিজেপির সভা ছিল, তার কাছেই লাগদা গ্রামের দু’টি বাড়িতে গিয়ে মোদী সরকারের সাফল্য প্রচার-পুস্তিকা তুলে দেন অমিত শাহ।
তৃণমূল সূত্রের খবর, পুলিশের সাহায্য নিয়েই শিশুবালা রাজাবর, সঞ্জয় রাজাবর, অষ্টমী রাজাবর, ফুচু রাজাবরদের শুক্রবার কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বিকেলে তাঁদের নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন মদন মিত্র ও রাজ্যসভা সাংসদ শান্তনু সেন।
সেখানে মদন দাবি করেন, এই পরিবারগুলির বাড়িতে গিয়ে আধা সামরিক বাহিনী ও বিজেপি নেতারা তাঁদের বিজেপিতে যোগ দিতে জোর করেন। আচমকাই উপস্থিত হয়ে যান অমিত শাহ।
মদন মিত্রের বক্তব্য, ‘‘এঁরা কিছুই জানেন না। ভয়ঙ্কর চেহারাগুলি এসে বলে ‘আমরা এসেছি। এঁরা ঘাবড়ে যান। এঁদের বলা হয়— বিজেপিতে যোগ দিতে হবে। ভয় পেয়েই এঁরা এককাপড়ে সকালে কালীঘাটে উপস্থিত হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্রয়ে থাকবেন বলে।’’
মদন দাবি করেন, বিজেপি সভাপতি ‘ডাকাত’ অমিত শাহর থেকে বাঁচতে ‘মাতৃরূপী’ মমতার আশ্রয়ে এসেছে এই পরিবারগুলি।
প্রাক্তন পরিবহনমন্ত্রীর দাবি, ‘‘এটা মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত নয়। এখানে এসব চলবে না। আগের বার এসে অমিত শাহ দলিত পরিবারের বাড়িতে বসে ভাত খেয়েছিলেন। এবার চেয়ার জুটল না। পরের বার মানুষ আর ঘরেই ঢুকতে দেবে না।’’
যাঁদের বাড়িতে অমিত শাহ গেলেন, তাঁরাই পরের দিন তৃণমূলের মঞ্চে চলে যাওয়াতে মুখ পুড়েছে বিজেপি নেতাদের। এই ঘটনা অস্বস্তি বাড়িয়েছে বিজেপি জাতীয় সভাপতির।
দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ অবশ্য তৃণমূলের বিরুদ্ধেই ভয় দেখানোর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ভয় পেয়ে এই পরিবারকে জোর করে তুলে কলকাতায় এনেছে তৃণমূল নেতারা। এর জবাব মানুষ ভোটের বাক্সে ঠিক দিয়ে দেবেন।’’
এর আগেও নকশালবাড়িতে যে বাড়িতে গিয়ে অমিত শাহ মধ্যাহ্নভোজ সেরেছিলেন, পরের দিন সেই পরিবারকে তৃণমূলের সমর্থক বলে, পরিবারের সদস্যদের বসিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন মন্ত্রী গৌতম দেব।
শুক্রবারও একই কাণ্ড ঘটল। কলকাতায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে রাজাবর পরিবারের হাতে তেরঙা পতাকা তুলে দিলেন মদন-শান্তনু।