উত্তরবঙ্গ তো বটেই, গোটা দেশের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতের যোগযোগ রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ফরাক্কা সেতু। নেপাল, ভুটান যাওয়ার জন্য এই সেতুর উপরে নির্ভরশীল যাত্রী অথবা পণ্যবাহী যানবাহন। অথচ সেই সেতুর স্বাস্থ্য নিয়েই চিন্তায় প্রশাসন এবং ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ।
মাঝেরহাট কাণ্ডের পরে সে চিন্তা আরও বেড়েছে। দীর্ঘ কয়েক দশক পরে তাই সেতুর পুরোদমে সংস্কার করতে চলেছে ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে রাজ্য সরকার।
১৯৭৫ সালে চালু হয় ফরাক্কা ব্রিজ। রেল লাইন এবং সড়ক পথে ব্রিজ, দুইই রয়েছে ব্যারাজের লক গেটের উপরে। ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, অবিলম্বে যানবাহন চলাচলের জন্য ব্যবহৃত সেতুটির সংস্কার প্রয়োজন। গাড়ি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ না করতে হলেও ভারী যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রায় ছ’মাস ধরে চলবে কাজ। তবে এই কাজের জন্য উত্তরবঙ্গ এবং কলকাতার মধ্যে যাত্রীবাহী বাস চলাচলে কোনও প্রভাব পড়বে না।
ফরাক্কা ব্যারেজের জেনারেল ম্যানেজার শৈবাল ঘোষ এদিন কলকাতায় জানান, সেতুর বেয়ারিং বদল থেকে শুরু করে উপরের রাস্তার পিচের আস্তরণ বদল, আগামী ছ’মাসে সেতুর যাবতীয় সংস্কার করা হবে। তবে রেল সেতুর কোনও সংস্কার হচ্ছে না। অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই কাজ শুরু হবে। নভেম্বর মাস থেকে শুরু হবে ভারী যানবাহন নিয়ন্ত্রণের কাজ। সবমিলিয়ে খরচ হবে ১০.৭৬ কোটি টাকা।
রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী জানান, পণ্যবাহী যান চলাচলের জন্য পুলিশকে বিকল্প পথের পরিকল্পনা করতে বলা হয়েছে। উত্তরবঙ্গে যাতে জরুরি পণ্য বা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহে কোনও প্রভাব না পড়ে, তা নিশ্চিত করবে রাজ্য। কথা বলা হবে ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার সঙ্গেও। মন্ত্রী বলেন, ‘‘মানুষের নিরাপত্তা আমাদের কাছে সবার আগে। তাই দ্রুত যাতে কাজ শুরু করা যায় সেটাই আমরা চেষ্টা করছি’’
ফরাক্কা সেতুর উপর দিয়ে দৈনিক বারো হাজারের বেশি যানবাহন চলাচল করে। কয়েকবছর আগেও সংখ্যাটা ছিল তিন হাজারের কাছাকাছি। কেন্দ্রীয় সরকারের রোড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রিপোর্টেও অবিলম্বে সেতুর মেরামতির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে ফরাক্কা সেতুর পাশেই একটি চার লেনের সেতু তৈরির পরিকল্পনা করেছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। ফরাক্কা ব্যারেজ সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার জানান, ওই সেতু তৈরি হলে বর্তমান সেতুটির উপরে চাপ অনেকটাই কমবে।