মাদক ব্যবসায় টলিউড এবং রাজনীতির জগতের কয়েকজন জড়িত বলে ‘নার্কোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরো’ (এনসিবি) জানতে পেরেছে। নাইট ক্লাবে ইভেন্ট আয়োজনকারী জেরম ওয়াটসনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশ কয়েকজন ‘প্রভাবশালী’র নামও পেয়েছেন বলে দাবি তদন্তকারীদের।
সোমবার রাতে সল্টলেক থেকে গ্রেফতার হয় মাদক ব্যবসার অন্যতম ‘কিংপিন’ নিলয় ঘোষ এবং জেরম। মাদক জগতে নিলয়ের কোড নেম ‘লুসি নীল’! এখন সেই নাম উল্লেখ করে কথাবার্তা চালিয়েই শহরে মাদক কারবারে জট খুলতে চায় এনসিবি। এদিন বারাসত আদালতে তোলা হলে নিলয়-জেরমের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
এনসিবি’র পূর্বাঞ্চলীয় শাখার অধিকর্তা দিলীপ শ্রীবাস্তব বললেন, ‘‘ওদের জেরা করে বেশ কয়েকজনের নাম পেয়েছি। নিলয়ই কিংপিন।’’ এক তদন্তকারী আধিকারিক বুধবার বলেন, ‘‘নতুন করে ওদের হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজন নেই। যা জানার জেনে নিয়েছি, এবার বাকিদের গ্রেফতার করার পালা।’’
এনসিবি সূত্রের খবর, সোমবার রাত এবং মঙ্গলবার দিনভর দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ওই দু’জনকে। তাতেই তদন্তকারীরা জেনেছেন, উত্তর এবং দক্ষিণ কলকাতায় মাদক কারবারের পাণ্ডা ছিল এঁরা। জেরমের থেকে যোগাযোগ বেশি নিলয়ের। ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ম্যানেজমেন্ট কলেজের যোগাযোগ ব্যবহার করার পাশাপাশি, পারিবারিক ‘সোর্স’ও কাজে লাগিয়েছিল বিধাননগরের প্রাক্তন পুরপ্রধানের নাতি নিলয়।
তদন্তকারীরা জেনেছেন, কলেজে পড়ার সময়েই নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে নিলয়। সেই সময় হাতখরচের জন্য এলএসডি (লাইসার্জিক অ্যাসিড ডাইথ্যালামাইড) এবং এমডিএমএ (মিথাইলিনডাই-অক্সিমেট-অ্যাম্ফিটামিন) বিক্রি শুরু করে। চিকিৎসক বাবার পরিচিত ওষুধ ব্যবসায়ীদের একাংশের নাম ভাঙিয়ে ‘ডার্ক ওয়েবে’ (নকল সার্ভারের ওয়েবসাইট, যেখানে তথ্য গোপন থাকে) অ্যাকাউন্ট খুলতে পেরেছিল নিলয়। পরে সেই ওয়েবপথেই মাদক কিনত সে।
তদন্তকারীরা জেনেছেন, মাদক ব্যবসার প্রয়োজনেই সল্টলেকের সিজে ব্লকের বাড়ির নীচে ওষুধের দোকান করে নিলয়। ওই দোকান থেকেই ক্রেতাদের মাদক দ্রব্য সরবরাহ করা হতো বলে এনসিবি সূত্রের খবর।