বরেণ্যদের মূর্তিতে কালি মাখানোর ‘অসুখ’ এবার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়েও!
প্রেসিডেন্সির দ্বিশতবর্ষ উপলক্ষে মেন বিল্ডিংয়ের বিভিন্ন জায়গায় কৃতী প্রাক্তনীদের নাম খোদাই করা হয়েছিল। সেখানে অন্যদের সঙ্গে নাম রয়েছে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়েরও। সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা দেখতে পান, শ্যামাপ্রসাদের নামের উপর কালো কালি মাখানো হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কোনও সংগঠন দায় স্বীকার করেনি। কারা কালি মাখিয়েছে, তা-ও জানতে পারেননি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করতে একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া জানিয়েছেন, দোষীদের চিহ্নিত করে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিন বিকেলে ওই কালি মুছে দেন প্রেসিডেন্সির কর্মীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় সবকটি ছাত্র সংগঠন কালি মাখানোর ঘটনার প্রতিবাদ করেছে।
রেজিস্ট্রার দেবজ্যোতি কোনার জানান, পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত তমিটি তৈরি করা হয়েছে। ওই কমিটি সবপক্ষের সঙ্গে কথা বলে রিপোর্ট জমা দেবে। পুলিশকেও বিষয়টির কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।অনুরাধার আমলে প্রেসিডেন্সিতে ঢোকা-বেরনোর ক্ষেত্রে অত্যন্ত কড়াকড়ি রয়েছে বলে অভিযোগ। গেটে আই কার্ড না দেখিয়ে কোনও পড়ুয়া বা অধ্যাপককে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয় না। বহিরাগতেরা নাম-ঠিকানা লিখে তবেই ক্যাম্পাসে প্রবেশের অনুমতি পান। এর প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, ভিতরের কেউই এ কাজ করেছে। তবে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। সম্ভবত, রবিবার রাতেই কালি মাখানো হয়েছে।’’
প্রেসিডেন্সির ছাত্র সংসদে ক্ষমতাসীন ইন্ডিপেন্ডেন্ট কনসলিডেশন (আইসি) ঘটনার নিন্দা করে বিবৃতি দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে— ‘শ্যামাপ্রসাদের রাজনীতির কোনও স্থান প্রেসিডেন্সিতে বা বাংলায় নেই। কিন্তু ওই রাজনীতির বিরোধিতা মূর্তি ভেঙে বা কালি মাখিয়ে করা সম্ভব নয়। মূর্তি ভাঙার রাজনীতির বিরোধী আমরা। এই ধরনের রাজনীতি বর্জন করার আহ্বান জানাচ্ছি।’’ এসএফআই এবং আইসা’ও ঘটনার প্রতিবাদ করেছে।
প্রেসিডেন্সির প্রাক্তন অধ্যক্ষ অমল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমার প্রশ্ন, প্রেসিডেন্সির নিরাপত্তা ব্যবস্থা কি উপযুক্ত নয়! না-হলে এমন ঘটনা ঘটল কী করে! কেউ খেয়াল করলেন না কেন!’’ তাঁর কথায়, ‘‘যাঁরা কালি মাখিয়েছেন, তাঁরা ইতিহাস জানেন না। শ্যামাপ্রসাদ কোনও রাজনৈতিক দলের সম্পত্তি নন। তিনি এক মহান পুরুষ।’’