বিয়ে করবেন বলে পাত্রের খোঁজে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন পাত্রী নিজেই। বিজ্ঞাপনের বয়ানে তাঁর পরিষ্কার দাবি, পাত্রকে ঘরজামাই হয়ে থাকতে হবে। এবার আচমকা চোখ আটকে যায় পাত্রীর পরের বক্তব্যে, পাত্রের যৌন অক্ষমতা থাকলেও আপত্তি নেই।
সংবাদপত্রে পাত্রপাত্রীর বিজ্ঞাপনের চেনা ছকের বাইরে এমন ব্যতিক্রমী বয়ানটি হয়তো চোখে পড়েছে অনেকেরই। বিয়ে করবেন বলে পাত্রের খোঁজে নিজেই বিজ্ঞাপনটি দিয়েছিলেন মানিকতলার বছর সাতচল্লিশের শম্পা (নাম পরিবর্তিত) সাহা। ঘটনা হল, বিজ্ঞাপন বেরনোর পর থেকেই প্রচুর ফোন আসা শুরু হয়েছে শম্পার মোবাইলে। শম্পার বক্তব্য, তাঁদের মধ্যে অনেকে সত্যিই বিয়েতে আগ্রহী। আবার অনেকেই ‘মিথ্যাবাদী’ এবং ‘বদমাশ’।
কী ধরনের বদমাশি সহ্য করতে হচ্ছে তাঁকে? শম্পার কথায়, ‘‘অনেকেই ফোন করে আজেবাজে কথা বলেন। খুব বদমাশ। একজন রেলে চাকরি করেন বলে দাবি করে রোজই ফোন করেন। অনেকেই যোগাযোগের সময় মিথ্যা কথা বলেছিলেন। পরে তাঁরা আর যোগাযোগ করেননি।’’
বিজ্ঞাপনে শারীরিক অক্ষমতার বিষয়টি উল্লেখ করা কি খুব জরুরি ছিল? শম্পার সাবলীল সহজ উত্তর, ‘‘যে সমস্ত পুরুষের যৌন অক্ষমতা থাকে তাঁদের অনেকেই বিয়ে করতে চান না। আমি বোঝাতে চেয়েছি, আমার কাছে ওটা পছন্দ, অপছন্দের কোনও মাপকাঠি নয়। আমি ২৬ বছর বয়স থেকেই রামকৃষ্ণদেব এবং মা সারদার আদর্শে দীক্ষিত। আমার কাছে পছন্দ-অপছন্দের মাপকাঠি আলাদা।’’ শম্পার বাবা অবসরপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী। বয়স ৭৪। মা ৬৭। শম্পা বলেন, ‘‘আমি সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর পাশ করেছিলাম। বাবার অসুস্থতার জন্য চাকরি ছাড়তে হয়েছে।’’ ঘরজামাই পাত্র চাওয়ার কারণ হিসাবে তিনি বলেন, ‘‘আমি ছাড়া বাবা-মাকে দেখার কেউ নেই। আমিই তাঁদের একমাত্র মেয়ে।’’
শম্পা জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত বিয়ের আগ্রহ দেখিয়ে তাঁকে ফোন করেছেন ৫০ জনেরও বেশি। তাঁর কথায়, ‘‘এমন কয়েকজন ফোন করেছেন যাঁদের যৌন অক্ষমতা রয়েছে। যাঁরা নিজেদের সরকারি অফিসের কর্তা বলে দাবি করেছিলেন। পরে আর তাঁরা যোগাযোগ করেননি। সেই কারণেই তাঁদের আমি মিথ্যাবাদী বলছি।’’ তবে বেকার কোনও পুরুষকে বিয়ে করতে নারাজ শম্পা। তাঁর স্পষ্ট জবাব, ‘‘বাবা অবসর নিয়েছেন বহুদিন আগেই। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। তাঁর পয়সায় বসে বসে খাবে নাকি!’’