মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, এদিন সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ সালারের কান্দ্রা এলাকায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন ভুটান শেখ নামে এক তৃণমূল কর্মী। মৃতের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুরনো একটি খুনের জেরেই ওই ঘটনা ঘটেছে বলে সন্দেহ পুলিশের।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এদিন কান্দ্রায় তৃণমূলের অফিস থেকে মোটরবাইকে চড়ে নিজের বাড়ি গুলাহাটে ফেরার সময় কান্দ্রা পেট্রোল পাম্পের কাছে দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হন ভুটান। তাঁকে কাছ থেকে গুলি করে পালিয়ে যায় আততায়ীরা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ভুটানের। এই ঘটনায় মোট আটজনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
তবে অভিযুক্তদের কাউকেই এদিন রাত ৯টা পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তৃণমূলের দাবি, কংগ্রেস এবং সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই ভুটানকে খুন করেছে। সালারে তৃণমূল শক্তিশালী হয়ে ওঠায় সিপিএম-কংগ্রেস এক হয়েছে বলে দাবি তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমানের।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন, গত ৩১ অক্টোবর গুলাহাট গ্রামে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান স্থানীয় তৃণমূল নেতা কাজল শেখের মা তাসেনা। কাজলের সঙ্গে ওই এলাকায় তৃণমূল নেতা হামিদ শেখের বিবাদ দীর্ঘদিনের। ওই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন ভুটান। তিনি হামিদ গোষ্ঠীর লোক বলে পরিচিত ছিলেন। এদিন এক জেলা পুলিশ কর্তা জানান, ভুটানের খুনের কারণ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। তবে একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত চলছে।
বীরভূমের লোবা পঞ্চায়েতের ঝিরুলি গ্রামে এদিন একশো দিনের কাজকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তেজনা ছড়ায়। শাসকদলের কোন গোষ্ঠীর লোক পুকুর কাটার কাজ করবে, তা নিয়ে প্রথমে বচসা শুরু হয়। তারপর হাতাহাতি থেকে দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয়ে যায় বোমাবাজি।
ধারাল অস্ত্রের কোপে আহত হন দু’জন গ্রামবাসী। গন্ডগোলের জেরে মোট পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রের খবর। আহতদের দুবরাজপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে দুবরাজপুর থানার পুলিশ।
বর্ধমানে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে এদিন রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় কেতুগ্রামের বিরুলি গ্রাম। এদিন সকাল থেকে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দফায় দফায় বোমাবাজিতে তিনজন জখম হন। তার মধ্যে বোজাই শেখ নামে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে। তাঁকে প্রথমে বীরভূমের সিয়ান হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও পরে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়েছে।
এদিনের গন্ডগোলে মূল অভিযুক্ত হিসাবে নাম জড়িয়েছে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ‘ঘনিষ্ঠ’ আফরুখ শেখের। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান বাদশা শেখকে খুনের অভিযোগে দীর্ঘদিন গ্রামছাড়া ছিলেন আফরুফ। অভিযোগ, এদিন সকালে দলবল নিয়ে গ্রামে ঢুকে কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ শাহনওয়াজের গোষ্ঠীর লোক জাহিদ শেখের উপরে হামলা চালায় আফরুফ।
আটটি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমাও ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। এরপর এলাকায় ঢোকে পুলিশের বিশাল বাহিনী। এদিনের গন্ডগোলের জেরে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। গোষ্ঠী সংঘর্ষের অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক। তাঁর বক্তব্য, পারিবারিক বিবাদের জেরে এই ঘটনা। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।