সোশ্যাল মিডিয়া থেকে চায়ের দোকান সর্বত্র এক আলোচনা। আর সেই আলোচনা বলছে, ব্রিগেড জনসভা ব্যর্থ। কারণ, মানুষের কথায় নরেন্দ্র মোদী বা বিজেপির বিকল্প নিয়ে এত নেতার কথা যত না তার চেয়ে বেশি ‘ডিম্ভাত’ চর্চা।
কিন্তু কেন ডিম-ভাত? বিরিয়ানি না হোক, নিদেন পক্ষে চিকেন-ভাত এর আয়োজন কি করতে পারত না শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস? ব্রিগেড জনসভার প্রচারের জন্য যে পরিমাণ টাকা খরচ হয়েছে তাতে এমন কিছুই চাপ হত না ওইটুকুতে।
তাহলে ডিম-ভাত কেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা গেল এমনি এমনি নয়, এমনকী খরচ কমানোর জন্যও নয়, রীতিমতো পরিকল্পনা মাফিক মেনুতে ডিম বেছে নেওয়া। আর এটা এই ব্রিগেড সমাবেশেই প্রথম নয়। এর আগেও তৃণমূল কংগ্রেসের বিভিন্ন সমাবেশে মেনু হিসেবে গুরুত্ব পেয়ে এসেছে ডিম-ভাত।
গত বিধানসভা নির্বাচন থেকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের কর্মিসভা, বুথ কর্মীদের প্রশিক্ষণ, জেলায় জেলায় মুখ্যমন্ত্রীর সমাবেশ সবেতেই কর্মীদের লাঞ্চ কিংবা ডিনারে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছে ডিম। এর পিছনে কারণও রয়েছে যথেষ্ট। নেতাদের কথা থেকেই জানা গেল সেই সব কারণ। আর সেই কারণগুলি সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী একটি দলের ক্ষেত্রে মোটেও এলেবেলে নয়। জেনে নিন তৃণমূল নেতাদের ছয় যুক্তি—
১। ডিম সস্তা। না সেটাই মূল কারণ না হলেও একটা কারণ। এটা কমন মেনু হলে যেখানে সংগঠন আর্থিক ভাবে শক্তিশালী নয়, তাদের ক্ষেত্রে কোনও হীনমন্যতায় ভোগার প্রশ্ন নেই।
২। জনসভা বা কর্মিসভায় যোগ দিতে এসে বেশির ভাগ সময়েই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খেতে হয়। সেক্ষেত্রে ডিম খুবই সুবিধাজনক।
৩। থালায় কিংবা প্যাকেটে ডিম-আলু ঝোল পরিবেশনের জন্য অত্যন্ত সুবিধাজনক।
৪। শুধু কত ডিম খরচ হয়েছে সেটা জেনেই বুঝে যাওয়া সম্ভব কত লোক সভায় এসেছে। এটা ছোট সভার ক্ষেত্রে সংগঠনের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। সংখ্যা দিয়ে অনেক অঙ্ক কষতে হয় রাজনৈতিক দলকে।
৫। ডিম যদি মেনু হয়, কম পড়া বা বেশি হওয়ার ভয় নেই। লোক বেশি হলে সেদ্ধ করে ঝোলে ফেলে দেওয়া আর কম হলে সেদ্ধ না করে বাজারে ফেরত পাঠানো যায়।
৬। শেষ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ যুক্তিটিও ফেলে দেওয়ার মতো নয়। মাংসের হাড়, মাছের কাঁটা মানেই আবর্জনা। সভাস্থল পরিষ্কার রাখার জন্য খোসা ছাড়ানো ডিমের জুড়ি নেই।